স্যালাডে হোক বা স্যান্ডউইচে, মাখনের মতো মেয়োনিজ়ের পরত না হলে কি আর চলে! আর মেয়োনিজ় বলতে ডিম মেশানো মেয়োনিজ়ই বেশি কেনা হয়। কারণ, এর স্বাদ বেশি আর যে কোনও ভাজাভুজি বা স্যালাডের সঙ্গে খেতে খাসা লাগে। স্কুলের টিফিনে অনেক মা-ই পাউরুটির ভিতর খানিক মেয়োনিজ় পুরে তাতে শসা-পেঁয়াজ বা ডিম দিয়ে স্যান্ডউইচ বানিয়ে ছোটদের দেন। দোকানে এখন নানা রকমের মেয়োনিজ়ও পাওয়া যায়। যদি ডিম দেওয়া মেয়োনিজ় কিনে থাকেন, তা হলে তার লেবেল পরীক্ষা করে আজই বাতিল করে দিন। কারণ, ডিম মেশানো মেয়োনিজ় নাকি শরীরের জন্য বিষ।
মেয়োনিজ় নিয়ে আগেও ধরপাকড় হয়েছে কেরলে। ভেজাল উপকরণ দিয়ে বানানো মেয়োনিজ় রাস্তার ধারের দোকানগুলিতে ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। আর এখন বিবৃতি দিয়ে কাঁচা ডিম মেশানো মেয়োনিজ়ের বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। হঠাৎ করে এমন ফরমান জারি হল কেন?
‘ফুড সেফটি অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর তথ্য বলছে, মেয়োনিজ়ে কাঁচা ডিম মেশানো হয়। তা ছাড়া সঠিক ভাবে সংরক্ষণ না করা তেল, লেবুর রস বা ভিনিগার ও নানা প্রিজ়ারভেটিভ দেওয়া হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে কাঁচা ডিম হল ব্যাক্টেরিয়ার আঁতুরঘর।
আরও পড়ুন:
কাঁচা ডিম বেশি দিন রেখে দিলেই তাতে ‘সালমোনেল্লা’ নামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। এই সালমোনেল্লা পেট ও খাদ্যনালিতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আরও একটা ব্যাপার হল, ডিম কত দিন ধরে রেখে দেওয়া হয়েছে, তা আপনার জানা নেই। ভিতরে ভিতরে পরজীবী বাসা বেঁধেছে কি না, তা-ও অজানা। ডিম উচ্চ তাপমাত্রায় সেদ্ধ করার সময় সমস্ত ব্যাক্টেরিয়া-পরজীবী নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু মেয়োনিজ়ে কাঁচা ডিমই মিশিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ভিনিগার ও নানা রকম প্রিজ়ারভেটিভ মিশে তা পরজীবীদের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। কেবল সালমোনেল্লা নয়, কাঁচা ডিম থেকে মেয়োনিজ়ে ই কোলাই ও লিস্টেরিয়া মোনোসাইটোজেনস নামক ব্যাক্টেরিয়াও বাসা বাঁধে। এই সব জীবাণু থেকে কলেরা বা আন্ত্রিক ছড়াতে পারে।
রোজ যদি কাঁচা ডিম মেশানো মেয়োনিজ় কেউ খান, তা হলে ডায়েরিয়া হতে বাধ্য। তা ছাড়া পেটে সংক্রমণও হতে পারে। জ্বর, বমি, পেটব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেবে। শিশু, বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বাদের একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। যদি শরীরে বিভিন্ন রকম অসুখবিসুখ থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, তা হলে এমন মেয়োনিজ় দিনের পর দিন খেয়ে গেলে পেটে বিষক্রিয়া হতে পারে।