Advertisement
E-Paper

মোটা হলে ক্ষতি হয় মগজেরও! ঢেঁড়স সে সমস্যার সমাধান করতে পারে, কী ভাবে? জানাচ্ছে গবেষণা

ছোট বেলায় অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া আর অতিপুষ্টির প্রভাব পড়তে পারে পরবর্তী কালে। সন্তান বড় হলে তাদের স্থূলত্বের সমস্যার পাশাপাশি মস্তিষ্কেও প্রভাব পড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ১৫:৩৫

ছবি : সংগৃহীত।

হীরকরাজার সভাকবি বলেছিল, ‘অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ’। আধুনিক গবেষণা শুধু সেখানেই থেমে থাকছে না। তারা আরও এক ধাপ এগিয়ে বলছে, বেশি খেলে শুধু মেদই বাড়ে না, অতিপুষ্টি, আর তা থেকে মেদবৃদ্ধি মস্তিষ্কেরও ক্ষতি করতে পারে। সেই ক্ষতি এমনই যে, তার জেরে বাড়তে পারে রক্তে শর্করার মাত্রা, এমনকি, সেই শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে যে ইনসুলিন, তা-ও কাজ না করতে পারে। আর তেমন যদি হয়, তবে একাদিক্রমে হার্ট, কিডনি, লিভার-সহ শরীরের নানা প্রত্যঙ্গে বাসা বাঁধতে শুরু করবে কঠিন সব ব্যাধি। স্বস্তির বিষয় হল, এই সবই আটকানো সম্ভব। আর তা সম্ভব ঢেঁড়সের সাহায্যে। অন্তত তেমনই জানাচ্ছে গবেষণা।

ঢেঁড়স মস্তিষ্ককে প্রভাব ফেলবে কী ভাবে?

ব্রাজ়িলের সরকারি গবেষণা সংস্থা, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রাজ়িলেরই অন্য বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মস্তিষ্ক সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি। তাতে বলা হচ্ছে ছোটবেলায় যেহেতু শিশুদের খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করেন বাবা-মায়েরা, তাঁরা অনেক সময়েই সন্তানকে বেশি খাইয়ে ফেলেন। ছোটবেলায় এই অতিরিক্ত খাওয়াদাওয়া আর অতিপুষ্টির প্রভাব পড়তে পারে পরবর্তী কালে। সন্তান বড় হলে তাদের স্থূলত্বের সমস্যার পাশাপাশি মস্তিষ্কেও প্রভাব পড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিষয়টি ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে দেখিয়েছেনও তাঁরা।

গবেষণার জন্য বেশ কিছু সদ্যোজাত ইঁদুরকে একটি ছোট জায়গায় আবদ্ধ রেখে, তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার দেন বিজ্ঞানীরা। ছোট জায়গায় রাখার ফলে তাদের সক্রিয়তা কমে। বড় হলে তাদের মধ্যে দেখা দেয় স্থূলত্ব। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেন, ইঁদুরের মস্তিষ্কেও তার প্রভাব পড়েছে। শুরু হয়েছে হাইপোথ্যালামাস ইনফ্ল্যামেশন।

হাইপোথ্যালামাস ইনফ্ল্যামেশন কী?

হাইপোথ্যালামাস ইনফ্ল্যামেশন হল মস্তিষ্কের এমন এক রোগ, যা মাথার একটি বিশেষ অংশকে প্রভাবিত করে। তার ফলে সরাসরি প্রভাবিত হয় শরীরে বিপাকক্রিয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এমনকি, হরমোনের ক্ষরণও। যার জেরে শরীরে স্থূলত্ব, টাইপ টু ডায়াবিটিস এবং হার্টের রোগ দেখা দিতে পারে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন ইঁদুরের মস্তিষ্কে ওই হাইপোথ্যালামাস ইনফ্ল্যামেশন দেখার পরে তাদের নিয়ম করে ঢেঁড়স খাওয়ানো হয়। তাতে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন হয়।

কী কী পরিবর্তন হয়েছে ঢেঁড়স খাওয়ানোর পরে?

১। নিয়মিত ঢেঁড়স খাওয়ানোর পরে দেখা যায়, ইঁদুরের শরীর খাবার থেকে ফ্যাট সংগ্রহ করছে ধীর গতিতে।

২। খাবার থেকে শর্করা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়ায়ও ধীর গতি হয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় না।

৩।দেখা যায়। রক্তে যাওয়া শর্করা ভাঙতে সাহায্য করে যে ইনসুলিন, তাকে তার কাজ করতে সাহায্য করেছে ঢেঁড়স। ফলে ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্সের মতো সমস্যা তৈরি হয়নি। রক্তে যাওয়া গ্লুকোজ় যথাযথ ভাবে ভাঙার প্রক্রিয়াও চালু থেকেছে। এতে হার্টের, ডায়াবিটিসের সমস্যা, স্থূলত্বের জটিলতার মতো সমস্যাও আটকানো গিয়েছে।

৪। শুধু তা-ই নয়, মস্তিষ্কের ওই বিশেষ অংশে হাইপোথ্যালামাস ইনফ্ল্যামেশন কমে যাওয়ায় অকারণ খিদে বোধও হয় কম। ফলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা কমে।

৫। এর পাশাপাশি ঢেঁড়সে থাকা ক্যাটেসিন, কোয়ারসেটিনের মতো অ্যান্টি অক্সি-অড্যান্টস শরীরের অন্যান্য অসুস্থতা সারাতেও সাহায্য করে।

অতএব

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, জন্মানোর পরে যে সমস্ত ইঁদুরকে অতিরিক্ত খাওয়ানো হয়নি, তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু ঢেঁড়স কোনও অতিরিক্ত প্রভাব ফেলেনি। বদল হয়েছে তাদেরই, যাদের অতিপুষ্টির ফলে মেদবৃদ্ধি হয়েছিল। অর্থাৎ মস্তিষ্কের ক্ষতি পূরণ করতে পারে ঢেঁড়স। তবে গবেষকেরা এ-ও জানাচ্ছেন যে, বিষয়টি এখনও মানুষের উপর পরীক্ষা করা বাকি। তাই এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।

Okra for Brain Health Okra Benefits Okra Water Ladies Finger
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy