Advertisement
E-Paper

ডিম্বাণু ও শুক্রাণুতেও প্লাস্টিক? এ বার কি শরীরে প্লাস্টিক নিয়েই জন্মাবে শিশু?

রক্তে, মস্তিষ্কে গুঁড়ো প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে আগেই। আর এখন ডিম্বাণু ও শুক্রাণুতেও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের। কী বিপদ ঘনাচ্ছে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৬:০৫
Tiny Microplastics found in Human egg and sperms, including human bloodstream

শুক্রাণু-ডিম্বাণুতেও প্লাস্টিক? কী বিপদ ঘনাচ্ছে? ফাইল চিত্র।

রক্তে প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গিয়েছে আগেই। মানুষের মস্তিষ্কেও প্রবেশ করেছে তারা। এমনকি মায়ের গর্ভেও প্লাস্টিকের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। আর এখন বিপদ নাকি আরও বেড়েছে। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুতেও ঢুকে পড়েছে প্লাস্টিক। তা হলে কি এ বার শরীরে প্লাস্টিকের কণা নিয়েই জন্মাবে শিশু?

‘ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ হিউম্যান রিপ্রোডাকশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি‘-থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ডিম্বাশয়ের ভিতরে যে ফলিকিউলার ফ্লুইড ডিম্বাণুকে ঘিরে রাখে, তার মধ্যেও পাওয়া গিয়েছে গুঁড়ো প্লাস্টিক। আবার শুক্রাণুর ভিতরেও পাওয়া গিয়েছে প্লাস্টিকের কণা। গবেষকদের ধারণা, রক্তস্রোতে বাহিত হয়ে জনন কোষেও প্রবেশ করছে মাইক্রোপ্লাস্টিক।

গবেষকেরা ২৯ জন মহিলার ফলিকিউলার ফ্লুইড (যে তরলের মধ্যে ডিম্বাণু বিকশিত হয়) ও ২২ জন পুরুষের সেমিনাল ফ্লুইড (যে তরলের মধ্যে শুক্রাণু থাকে) নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। তাতে দেখা যায়, মহিলাদের ৬৯ শতাংশ ফলিকিউলার ফ্লুইড গুঁড়ো প্লাস্টিকে ভর্তি, আর পুরুষের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৫৫ শতাংশ। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, জনন কোষেই যদি প্লাস্টিক থাকে, তা হলে হয়তো ভ্রূণের শরীর গঠনের সময়ে তাতেও প্রবেশ করবে প্লাস্টিক।

নেদারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা কিছু দিন আগেই এক গবেষণাপত্রে লিখেছিলেন, মানুষের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিক বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। রক্তে এক বার প্লাস্টিক ঢুকলে তা যে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সহজে পৌঁছে যেতে পারে, তা বোঝা কঠিন নয়। ডেকে আনতে পারে নানাবিধ রোগব্যাধি, যা প্রাণঘাতীও হতে পারে। প্লাস্টিক দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর অবস্থানে রয়েছে শিশুরা। কারণ গবেষণায় এ-ও স্পষ্ট যে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের শরীরে প্রায় দশগুণ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। আর তা আসছে বিভিন্ন ভাবে। বাবা-মায়ের থেকে অথবা খাবার থেকে। জলের বোতল, খাবারের প্যাকেট, দুধের প্যাকেট থেকে শুরু করে ফেসওয়াশ, কসমেটিক্স, এমনকি প্রাণদায়ী ওষুধও বিকোচ্ছে এখন প্লাস্টিক কন্টেনারে। প্লাস্টিকের জলের বোতলেও লাখে লাখে থাকে গুঁড়ো প্লাস্টিক। ফলে তা শরীরেও প্রবেশ করছে অবাধে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহার এখনই বন্ধ না করলে ২০৪০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে প্লাস্টিক বর্জ্য বেড়ে যাবে প্রায় দ্বিগুণ।

মাইক্রোপ্লাস্টিক দিনের পর দিন শরীরে ঢুকে রক্তে মিশতে থাকলে তা বিভিন্ন জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। প্লাস্টিক রক্তে মিশলে ইনসুলিনের ক্ষরণে প্রভাব ফেলে। যা পরবর্তী সময়ে ডায়াবিটিসের কারণ হয়ে উঠতে পারে। শুধু তা-ই নয়, প্লাস্টিক শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও বদলে দিতে পারে। আর জনন কোষও যদি প্লাস্টিকের কবলে পড়ে, তা হলে প্রজননের প্রক্রিয়াই ব্যাহত হবে, এতে যেমন বন্ধ্যত্বের সমস্যা বাড়বে, তেমনই জটিল রোগ নিয়ে জন্মাবে শিশু।

Microplastic Sperm Reproductive Health infertility
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy