শরীরে কী রোগ বাসা বেঁধেছে তার লক্ষণ টের পাওয়া যায় না অনেক সময়েই। বিশেষ করে কিডনির অসুখের উপসর্গ ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। অনেক ক্ষেত্রেই এমন হয় যে, একটি কিডনি বিকল হয়ে গেলেও কাজ চলতে থাকে অন্যটি দিয়ে। ফলে ক্ষতির আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। শুধু পাথর জমা নয়, কিডনিতে আরও অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। অনেকেরই ধারণা আছে, কিডনির রোগ মানেই ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে, বারে বারে মূত্রনালিতে সংক্রমণ হবে অথবা তলপেটে ব্যথা হবে। তা কিন্তু না-ও হতে পারে। কিডনির রোগের আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেগুলি কী কী?
চোখের নীচে ফোলা ভাব, ফুলবে পা-ও
চোখের নীচে ফোলা ভাব মানেই তা ক্লান্তির ছাপ নয়। যদি দেখেন, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরেও চোখের নীচের অংশের চামড়া অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে রয়েছে, তা হলে বুঝতে হবে অন্য কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। একই ভাবে পায়ের পাতা ফুলে গেলেও তা এড়িয়ে যাবেন না। কিডনির রোগে শরীরে অতিরিক্ত জল জমা হতে থাকে। সে কারণে চোখের তলা, পা ফুলে যেতে পারে।
অতিরিক্ত ঝিমুনি ভাব
সারা শরীরে ক্লান্তি ভাব, অস্বাভাবিক রকম ঝিমুনি ভাল লক্ষণ নয়। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনির অসুখ হলে হরমোনের গোলমাল হয়। এরিথ্রোপয়েটিন নামে এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ হয় কিডনি থেকে। এই হরমোনটি শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। কিডনির রোগ হলে এই হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়, তখন লোহিত কণিকার সংখ্যাও কমতে থাকে। ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত কোষে কোষে পৌঁছতে দেরি হয়। এর জেরে শরীরে ক্লান্তি ভাব বাড়ে, চামড়া ফ্যাকাসে হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:
পেশির খিঁচুনি
হাত-পা, পেট, পিঠ, ঊরুর পেশিতে ক্রমাগত খিঁচুনি হতে থাকলে বুঝতে হবে কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। কিডনির কাজ হল শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বজায় রাখা। সেই কাজ ঠিকমতো না হলে তখন পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গিয়ে পেশির খিঁচুনি শুরু হয়। হয়তো দেখলেন, যখন তখন পায়ের পেশিতে টান ধরছে, কোমর বা পিঠে যন্ত্রণা হচ্ছে, অথবা বসে থাকার সময়েই পায়ের কাফ মাসল, ঊরুতে অস্বাভাবিক ব্যথা হচ্ছে। এমন লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।