ভূত, অশরীরী, প্রেত। এই সব শব্দের সঙ্গে কমবেশি সকলেই আমরা পরিচিত। কেউ ভূতে বিশ্বাস করে, কেউ আবার খুব জোরের সঙ্গে বলে ভূত বলে কিছু নেই। ভূতে ধরা নিয়ে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মত প্রচলিত আছে। জ্যোতিষ মতে কাদের ভূতে ধরে? খুব সাধারণ ভাবে বললে বলা যায়, যাদের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে জন্ম, আর চন্দ্র খুব দুর্বল ভাবে বৃশ্চিক রাশিতে থাকে, কালসর্প যোগ থাকে এবং লগ্ন ও সপ্তম এই অক্ষে রাহু-কেতু অবস্থান করে, তা হলে তাদের ভূতে ধরার সম্ভাবনা প্রবল।
বাড়িতে যদি ভূত থাকে, তা হলে ঈশাণ কোণ, ব্রহ্মস্থান, অগ্নিকোণ মেনে বাস্তুমতে বাড়ি করলেও ভূতের উপদ্রব থাকবে। সেই উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন দেশেই স্থানীয় কিছু নিয়ম আছে। আর সেই নিয়ম মেনেই ভূত তাড়াবার কিছু অনুষ্ঠান আছে। ভারতেও শাস্ত্রমতে ওঝা ডেকে কিছু ক্রিয়াকলাপ করা হয় ভূত তাড়াবার জন্য।
এবারে প্রশ্ন— বাড়িতে ভূত, প্রেত বা অশরীরী কোনও সত্তা থাকলে বাস্তুমতে কী ভাবে আমরা তা জানব। সাধারণত পুরনো বাড়ি যখন কেনা হয়, তখন এই জাতীয় সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই জাতীয় ঘটনা আকছার ঘটে। আবার নতুন খালি জায়গায় বাড়ি করার আগে সেই জায়গা সম্বন্ধে ভাল ভাবে খোঁজ খবর না নিয়ে বাড়ি করলে এই জাতীয় সমস্যায় পড়তে হয়।
বাড়িতে অশরীরীর উপস্থিতি কী ভাবে হয় এর সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। সবচেয়ে প্রচলিত কয়েকটি কারণ হল, কোনও বাড়িতে কেউ যদি আত্মহত্যা করে, বা কোনও ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনা ঘটে থাকে, বা কোনও গুমখুন হয়ে থাকে, যা বহু বছর পর জানা যায়, যৌন নির্যাতনের কারণে যদি খুন হয়ে থাকে বা এই রকম ঘটনা যদি কোনও বাড়িতে পরপর একটা নির্দিষ্ট অবকাশে প্রায়ই ঘটতে থাকে। এই কলকাতায় এই রকম অনেক বাড়ি রয়েছে।ইংল্যান্ডে তো এই রকম বাড়ির তালিকাও রয়েছে।
এবারে আমরা আলোচনা করব বাড়িতে যদি ভূত থাকে কী ভাবে তা আমরা বুঝতে পারব—
(১) যে বাড়িতে ভূত আছে, সেখানে অনেক সময় দেখা যায়,বন্ধ ইলেক্ট্রিক সুইচ হঠাত্ করে জ্বলে উঠল। বাল্ব হঠাত্ করে জ্বলে উঠল।
আরও পড়ুন: গৌরীশঙ্কর রুদ্রাক্ষ কখন ধারণ করবেন
(২) এই ধরনের বাড়ির কোনও ঘর বা চিলেকোঠা থেকে নানা ধরনের আওয়াজ, শব্দ, যেমন, ধস্তাধস্তির আওয়াজ, কাচের বাসনপত্র মেঝেতে পড়ে ভেঙে গেলে যেমন শব্দের সৃষ্টি হয় তেমন শব্দ, দরজা বন্ধ বা খোলার আওয়াজ, কারও হেঁটে যাওয়ার আওয়াজ, হাসির আওয়াজ— এই রকম নানা রকম শব্দ শোনা যায়। অথচ যেখান থেকে শব্দ আসছিল সেখানে পৌঁছনোর পর সে রকম কিছুরই হদিস পাওয়া যায় না।
(৩) আবার এও দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই অথচ ইলেকট্রিক লাইটগুলি জ্বলছে আর নিভছে।
(৪) হঠাৎ মনে হল, কোনও একটা ছায়া ঘরের এক দিক থেকে অন্য দিকে চলে গেল। পিছু নিয়ে দেখা গেল, কোথাও কিছু নেই।
(৫) যে বাড়িতে ভূত আছে সেখানে দেখা যায়— অচেনা, অপরিচিত অনেক জিনিসপত্র কে যেন ফেলে গিয়েছে। বন্ধ ঘর খোলার পর দেখা গেল জিনিসপত্র বা আসবাবপত্রের স্থান পরিবর্তন হয়ে আছে।
(৬) এই ধরনের বাড়িগুলোতে মিটমিট করে জ্বলা আলোতে একটা কুয়াশা মতো কিছু একটা আস্তে আস্তে সরে যেতে দেখা যায়।
(৭) বাড়ির কোনও একটা ঘরে বা স্থানে হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঠান্ডার অনুভূতি হয়।
(৮) বাড়িতে পোষা জীবজন্তু যেমন কুকুর বা বেড়াল থাকলে হঠাৎ করে তারা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। গভীর রাত্রে বা দুপুরে কোনও কারণ ছাড়া কুকুর বা বেড়াল ডাকতেই থাকে।
(৯) বাড়ির দেওয়ালে নানা ভাবে বিশ্রী রকম আঁচরের দাগ, বা কাঠের আলমারি বা কাঠের কোনও আসবার পত্রে খোদাই করা কোনও বিকৃত ছবি।
(১০) এই সব বাড়িতে অনেক সময় দেখা যায়— পোষা কুকুর, বেড়াল বা টিয়া পাখিকে রাত্রিবেলা ঘেরা জায়গায় কেউ বা কারা মেরে ফেলেছে।
উপরের দশটি লক্ষণ ছাড়া আরও অনেক লক্ষণ আছে ভূত আছে কিনা বোঝার জন্য। যাঁরা ভূত ধরায় অভিজ্ঞ, তাঁরা সহজেই এগুলি বুঝতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy