লন্ডনের বাসিন্দা যাবেজ উইলসনের মাথার চুল ছিল লাল। “লাল মাথা লিগ” নামে এক ভুয়ো সংগঠনের চাকরি দিয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে কিছু দিনের জন্য সরিয়ে দিয়েছিল এক দুষ্কৃতী দল।
আর্থার কোনান ডয়েলের “লাল মাথা লিগ” গল্পে শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা শার্লক হোমস আবিষ্কার করেছিলেন, উইলসনের বাড়ির উল্টো দিকে একটি ব্যাঙ্ক রয়েছে। বাড়ি থেকে সেই ব্যাঙ্ক পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কাটতেই তাঁকে বাড়ি থেকে সরানো হয়েছিল।
কার্যত সেই কায়দাতেই হরিয়ানার সোনেপত জেলায় ডাকাতি করেছে একটি দুষ্কৃতী দল। কয়েক দিন ছুটির পরে গত কাল অফিসে আসেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গোহানা শাখার ম্যানেজার দেবেন্দ্র মালিক। লকার-রুম খুলেই তাঁর চক্ষুস্থির। ঘরের মাটিতে রয়েছে সুড়ঙ্গের মুখ। আর ৩০০টি লকারের মধ্যে বেশ কয়েকটি খোলা। ভিতরে রাখা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র সাফ। পরে হিসেব করে দেখা গিয়েছে, মোট ৭৭টি লকার খুলেছে ডাকাতরা। নিয়ে গিয়েছে কয়েক কোটি টাকা ও বেশ কিছু মূল্যবান অলঙ্কার।
কোনান ডয়েলের গল্পের মতোই হরিয়ানায় ডাকাতির শেষ পর্ব সারার জন্য শনিবার রাতটাকে বেছে নিয়েছে ডাকাতরা। কারণ, সোমবারের আগে ব্যাঙ্ক খোলার সম্ভাবনা নেই। তাই পালানোর অনেক সময় পেয়েছে তারা। গোহানার ওই ব্যাঙ্কের কাছেই রয়েছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। সেখান থেকে ব্যাঙ্কের লকার-রুম পর্যন্ত ১২৫ ফুট লম্বা ও আড়াই ফুট চওড়া একটি সুড়ঙ্গ খুঁড়েছে ডাকাতরা। সোনেপতের পুলিশ সুপার অরুণ নেহরার দাবি, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য ডাকাতদের কাজ সারতে সুবিধে হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী লকার-রুমে ইস্পাতের প্লেট-সহ সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত। কিন্তু ব্যাঙ্কটির মেঝে সাধারণ বাড়ির মতোই সিমেন্টে তৈরি।
ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দেবেন্দ্র মালিকের পাল্টা দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা মেনেই আট থেকে ন’ইঞ্চি পুরু মেঝে তৈরি করা হয়েছিল। তৈরি করা হয়েছে শক্ত কংক্রিটের দেওয়ালও।
কোনান ডয়েলের গল্পে ডাকাতদের ছক বুঝে ফেলেছিলেন হোমস। শনিবার রাতে তাই পুলিশকে নিয়ে ব্যাঙ্কে তাদের অপেক্ষায় বসেছিলেন তিনি। কিন্তু গোহানার ব্যাঙ্ক ডাকাতির কিনারা এখনও করতে পারেনি পুলিশ। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য তৈরি হয়েছে বিশেষ দল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অপরাধীদের টিকিও ছুঁতে পারেননি গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy