Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
parliament

সংসদে উদ্বোধন ‘প্রেরণাস্থলের’, বয়কটে বিরোধীরা

সংসদের সচিবালয় জানিয়েছে, পরিকল্পিত ভাবে ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মূর্তিগুলি সংসদ ভবন চত্বরে, ‘প্রেরণাস্থলে’ সাজিয়ে রাখা হয়েছে যাতে দর্শকেরা সেগুলি একসঙ্গে দেখতে পান।

সংসদ চত্বরের ‘প্রেরণাস্থল’ উদ্বোধনের পরে গান্ধীমূর্তির সামনে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, ওম বিড়লা ও অন্যরা।

সংসদ চত্বরের ‘প্রেরণাস্থল’ উদ্বোধনের পরে গান্ধীমূর্তির সামনে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, ওম বিড়লা ও অন্যরা। ছবিঃ পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৯:২২
Share: Save:

বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদের মধ্যেই আজ সন্ধ্যায় সংসদ চত্বরে ‘প্রেরণাস্থলে’র উদ্বোধন করলেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। সঙ্গে ছিলেন সপ্তদশ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং কিরেণ রিজিজু, অর্জুন মেঘওয়াল, অশ্বিনী বৈষ্ণবের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। সংসদের সাত নম্বর গেটের কাছে এই অনুষ্ঠানে বিরোধী দলগুলির নেতা সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তাঁরা বয়কট করলেন এই অনুষ্ঠান। গত কালের মতো আজও সরকারকে নিশানা করেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশকে।

তিন দশক আগে সংসদ ভবনের প্রধান দরজার ঠিক সামনে মহাত্মা গান্ধীর ধ্যানমগ্ন মূর্তি বসানো হয়েছিল। ভাস্কর রাম ভি সুতারের তৈরি ১৬ ফুট উঁচু ব্রোঞ্জের তৈরি এই মূর্তির সামনের জায়গাটি সাংসদদের প্রতিবাদ, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে যায় কালক্রমে। নতুন সংসদ ভবন তৈরির পরে গান্ধী-মূর্তি সামান্য সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ বার ‘প্রেরণাস্থল’ তৈরি করে গান্ধীর মূর্তি, বি আর অম্বেডকর, ছত্রপতি শিবাজি, মহারাণা প্রতাপ, বীরসা মুন্ডা থেকে জ্যোতিরাও ফুলের মূর্তিও সংসদের এক কোণে এই প্রেরণাস্থলে জড়ো করে রাখা হয়েছে। এই জায়গাটিতে সাধারণত সাংসদদের যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

সংসদের সচিবালয় জানিয়েছে, পরিকল্পিত ভাবে ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মূর্তিগুলি সংসদ ভবন চত্বরে, ‘প্রেরণাস্থলে’ সাজিয়ে রাখা হয়েছে যাতে দর্শকেরা সেগুলি একসঙ্গে দেখতে পান। বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সেখানে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে মূর্তিগুলি দেখার পাশাপাশি এই দেশনায়ক ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবন সম্পর্কেও সবিস্তার জানতে পারেন। এ দিন গান্ধী-মূর্তিতে শ্রদ্ধাও জানান ধনখড়েরা।

আজ রমেশ সমাজমাধ্যমে বলেছেন, “লোকসভা ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যাচ্ছে পোট্রেট এবং মূর্তি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি শেষ বৈঠক করেছিল ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সপ্তদশ লোকসভায় (২০১৯ থেকে ২০২৪) এই কমিটির নবীকরণ করাও হয়নি। আজ সংসদ চত্বরে মূর্তিগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। এটা স্পষ্ট যে শাসক দল একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, মহাত্মা গান্ধী এবং অম্বেডকরের মূর্তির সামনে যে শান্তিপূর্ণ, বৈধ ও গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের ঐতিহ্য তৈরি হয়েছিল তাকে বন্ধ করা। গান্ধীর মূর্তি দু’বার সরানো হয়েছে। আরও বলার, এর পরে অম্বেডকর জয়ন্তী উদযাপন সংসদে আগের মাত্রায় আর করা যাবে না, কারণ আগের জায়গা থেকে সরিয়ে এক কোণে তাঁর মূর্তিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।"

তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার এর আগে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সংসদ চত্বরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে, চিরাচরিত প্রতিবাদের জায়গা থেকে গান্ধীজি, অম্বেডকরের মূর্তি সরানোর সাহস দেখাল কে? তাঁদের জায়গায় কি নাথুরাম গডসে ও নরেন্দ্র মোদীর মূর্তি বসানো হবে? সরকারকে এর উত্তর দিতে হবে।’’ আজ তাঁর বক্তব্য, ‘‘মোদী চতুর ভাবে গান্ধী ও অম্বেডকরের মূর্তি সংসদ চত্বরের এক কোণে সরিয়ে ফেললেন। কারণ, ওই দুই মূর্তির কাছেই সাধারণত বিরোধীরা প্রতিবাদ জানাতেন। মোদী প্রতিবাদকে ভয় পাচ্ছেন।’’ সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

parliament Jagdeep Dhankhar Om Birla
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE