যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে হাতছাড়া হচ্ছে একের পর এক ‘মুক্তাঞ্চল’। আর সেই সঙ্গেই ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের জেলাগুলি জুড়ে আত্মসমর্পণের হিড়িক পড়েছে মাওবাদী জঙ্গিদের। এ বার নারায়ণপুর জেলায় নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর মাঢ় ডিভিশনাল কমিটির তিনটি এরিয়া কমিটির কমান্ডার এবং সদস্যেরা অস্ত্র ছেড়ে শামিল হলেন মূল স্রোতে।
নারায়ণপুরের পুলিশ সুপার রবিনসন গুরিয়া শুক্রবার জানিয়েছেন, কুতুল, নেলনার এবং ইন্দ্রাবতী এরিয়া কমিটির ২২ জন নেতা-কর্মী নারায়ণপুরে রাজ্য পুলিশ ও দুই কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিএসএফ এবং ইন্দো তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) কর্তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁদের মাথার মোট দাম ছিল প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন মাঢ় ডিভিশনাল কমিটির সদস্য মানকু কুঞ্জম। তাঁর মাথার দাম ছিল আট লক্ষ টাকা। অন্য দিকে, তিন এরিয়া কমিটি নেতা, হিদমে কুঞ্জম, পুন্না লাল ওরফে বোটি এবং সানিরাম কোররামের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ছত্তীসগঢ় প্রশাসন।
আরও পড়ুন:
মাওবাদী সশস্ত্র বাহিনী পিএলজিএ-র (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি) আত্মসমর্পণকারী গেরিলাদের মধ্যে ১১ জনের মাথার দাম ছিল এক লক্ষ টাকা করে। সাত জনের ৫০ হাজার টাকা করে। রবিনসন জানান, সরকারি নীতি মেনেই আর্থিক সহায়তা এবং পুনর্বাসন পাবেন আত্মসমর্পণকারীরা। প্রসঙ্গত, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছিলেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। নতুন আত্মসমর্পণ নীতিতে মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পালন করতে ছত্তীসগঢ় বদ্ধপরিকর।