গত বছরের তুলনায় সামান্য বাড়ল এ বছরের অসম বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার। এ’বছর মোট ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৫৮৫ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসেছিল। পাশ করেছে ২লক্ষ ৩৯ হাজার ৬১৪ জন। শতাংশের হিসেবে পাশের হার ৬২.৭৯। এর মধ্যে ছাত্রদের পাশের হার ৬৪.১১ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাশের হার ৬১.৫৬ শতাংশ। প্রথম বিভাগ পেয়েছে ৫৪,১৯৭ জন। ৯৬,৫৬৮ জন দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। তৃতীয় বিভাগে পাশের সংখ্যা ৮৮,৮৪৯। এ বছর মেধা তালিকার প্রথম কুড়িতে স্থান পাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৩২। যা অভূতপূর্ব ঘটনা।
নির্বাচনে ভাল করার সঙ্গে এ বার শিক্ষাক্ষেত্রেও আধিপত্য দেখিয়েছে গেরুয়া বাহিনী। আরএসএসের অধীনে চলা বিদ্যা ভারতী প্রকল্পের অধীনস্থ শঙ্করদেব শিশু বিদ্যা নিকেতনগুলির ছাত্রছাত্রীরা এবারের এইচএসএলসির মেধা তালিকায় প্রথম-সহ অনেকগুলি স্থান অধিকার করেছে। বেজায় খুশি শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, ‘‘ভাল ফলের সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানো উচিত নয়। গ্রামে শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশে প্রতিটি পঞ্চায়েতে বিদ্যা ভারতীর স্কুল খোলার চেষ্টা চালানো হবে।’’
মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে শঙ্করদেব শিশু বিদ্যা নিকেতনে পড়া এবং বেতকুচি হাইস্কুল থেকে পরীক্ষায় বসা সরফরাজ হুসেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৯০। ৫৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ডিব্রুগড় মানকোট্টা সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের স্বাগত গগৈ ও নগাঁও সরকারি হাইস্কুলের ত্রিদীপ বরা। ৫৮৬ পেয়ে তৃতীয় স্থানে বরপেটার শঙ্করদেব বিদ্যা নিকেতনের দুই ছাত্র ভার্গব কাশ্যপ ও বিক্রমজিৎ দেউড়ি, গোয়ালপাড়া ফারিঙাপাড়া হাইস্কুলের ইলিয়াস বখতিয়ার, রঙিয়ার শঙ্করদেব শিশু নিকেতনের সমরজ্যোতি কলিতা, লখিমপুরের উদ্বাস্তু হাইস্কুলের জ্যোতির্ময় দত্ত।
মেধা তালিকার উপরের দিকে থাকা ২১ জনই ডিব্রুগড়ের। বিশেষ করে সল্টব্রুক অ্যাকাডেমি থেকে ১০ জন মেধাতালিকায় থাকায় স্কুলে সকাল থেকে উৎসবের পরিবেশ। ডিব্রুগড়ের লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে মেধা তালিকায় রয়েছে পাঁচ জনের নাম। অবশ্য জেলার হিসেবে ৭৮.০৬ শতাংশ পাশের হার-সহ পয়লা নম্বরে আছে ধেমাজি। ৭৫.৫৩ শতাংশ পাশের হারে দ্বিতীয় লখিমপুর। তৃতীয় নলবাড়ি। সেখানে পাশের হার ৭৩.৬৯ শতাংশ। চিরাং জেলা পাশের তালিকায় সবচেয়ে নীচে রয়েছে। সেখানে উত্তীর্ণের হার মাত্র ৪২.১১ শতাংশ। তারপরেই মন্দ পাশের হার কার্বি আংলং জেলায়, ৪৯.৭৯ শতাংশ।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রছাত্রী, তাঁদের পরিবর ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘আশা করি ভবিষ্যতে আরও নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে তারা। এরাই ভবিষ্যতে রাজ্য তথা দেশের সর্বাঙ্গীন বিকাশে মুখ্য ভূমিকা নিতে চলেছে।’’ উত্তীর্ণ হতে না পারা ছাত্রছাত্রীদেরও হতাশ না হয়ে আরও মন দিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএসএনএলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার এম কে শেঠ জানান, এইচএনএলসি পরীক্ষায় প্রথম দশে ঠাঁই পাওয়া পড়ুয়াদের সম্মানিত করবে বিএসএনএল ও বশিষ্ঠর দৃষ্টিহীন স্কুল থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া দশজন ছাত্রছাত্রীকে সাধ্যমতো সাহায্য করবে।
আজ হাই মাদ্রাসা পরীক্ষারও ফল প্রকাশি হয়েছে। ১০,১১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৭,৩৮৩ জন। পাশের হার ৭২.৯৬ শতাংশ। হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় ৫৪২ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে ধুবুরির চাপর মাদ্রাসা হাইস্কুলের ছাত্র আবু সুফিয়ান। ৫৪০ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বরপেটা জেলার হাউলি বিকেবিবি মাদ্রাসার মিজানমুন মীর। ৫৩৯ নম্বর পেয়ে তৃতীয় বরপেটার কিসমত মইনবাড়ি নবনূর হাই মাদ্রাসার ছাত্র শাহনুর আলম ও কোকরাঝাড় জেলার সাপকাটা নবজ্যোতি হাই মাদ্রাসার রেজ্জাক আলি শেখ।