আহত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন এক স্থানীয় বাসিন্দা। শুক্রবার গাঁধী ময়দানে। ছবি: পিটিআই
পটনার গাঁধী ময়দানে চলছিল দশেরার ‘রাবণ-দহন’। শুক্রবার সন্ধেয় তখন সেখানে লক্ষাধিক মানুষের ভিড়। আচমকা বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ার গুজবে ময়দান জুড়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ৩৩ জনের। জখম জনা পঁচিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দিন গাঁধী ময়দানের ৮টি প্রবেশপথের মধ্যে দু’টি খোলা হয়েছিল। একটি ছিল ভিআইপি-দের জন্য। রামগুলাব চকের দিকে অন্য গেট দিয়েই যাতায়াত করছিল কাতারে কাতারে মানুষ। পুলিশের বক্তব্য, ময়দানের কয়েকটি জায়গায় ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। সন্ধের অন্ধকারে কোনও ভাবে সেখানে হোঁচট খেয়ে পড়েছিলেন কয়েক জন। বৈদ্যুতিক তার পায়ে জড়িয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে মুহূর্তে গুজব ছড়িয়ে যায় গোটা মাঠে। হুড়মুড়িয়ে পালাতে শুরু করে সকলে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যায় ৬০-৭০ জন। তাঁদের উপর দিয়েই ভিড় দৌড়তে থাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩৩ জনের। তাঁদের ২৭ জন মহিলা, পাঁচ জন শিশু। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ভিড় সামলাতে সে দিন ময়দানে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। একটি মাত্র প্রবেশপথ সাধারণ মানুষের জন্য খোলা ছিল। দুর্ঘটনার পর বাকিগুলি খুলে দেওয়া হয়। ময়দানে যথেষ্ট আলোও ছিল না। বছর দুয়েক আগে পটনাতেই ছটপুজোর দিন ভিড়ে ঠাসা গঙ্গার ঘাটে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৮ জনের। তার পরেও প্রশাসন সতর্ক হয়নি।
পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। পটনার জেলাশাসক মণীশ কুমার বর্মার দাবি, ওই সন্ধেয় গাঁধী ময়দানের সমস্ত প্রবেশপথ খোলা ছিল। যথেষ্ট আলোও ছিল সেখানে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার তদন্তে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আমির সুহানি এবং এডিজি (সদর) গুপ্তেশ্বর পাণ্ডেকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিহার সরকার মৃতদের পরিজনদের ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া কথা ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা করে। তা ছাড়া গুরুতর জখমদের ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পটনার ডিভিশনাল কমিশনার এন বিজয়লক্ষ্মী-সহ চার জন আধিকারিককে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘটনার পর। রাজ্যের জলসম্পদ বিভাগের মুখপাত্র বিজয়কুমার চৌধুরি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “গাঁধী ময়দানে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় যাঁদের দায় আছে তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy