বিহারের মুজফফরপুর হয়ে উঠেছিল যেন আরও একটা গুড়াপ। এখানেরই একটা সরকারি হোমে ৭ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৪০ জনেরও বেশি নাবালিকাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। সরব হয়েছিল এক নাবালিকা। তাকে পিটিয়ে খুন করে হোম চত্বরেই পুঁতে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। সেই দেহের খোঁজেই সোমবার হোম চত্বরের মাটি খুঁড়তে শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েক জন প্রশাসনিক আধিকারিকও।
২০১২-তে পশ্চিমবঙ্গে হুগলি জেলার গুড়াপের একটি সরকারি হোমেও এ রকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই সরকারি হোমে গুড়িয়া নামে মূক-বধির মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন করে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। আরও কয়েকটি দেহ উদ্ধার হয় হোম চত্বরের আশপাশ থেকে।
সোমবার সকালে মুজফ্ফপুরের ওই সরকারি হোমে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। এ মাসের গোড়াতেই ২১ জন আবাসিককে উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি, হোমের মাটি খুঁড়ে তল্লাশি চালানো হয়। ধর্ষণের অভিযোগে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিককেও এ দিন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া আবাসিকদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। ১৬ জনকে নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
অভিযোগটা উঠছিল অনেক দিন ধরেই। টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিআইএসএস)-এর সৌজন্যেই শেষমেশ বিষয়টি সামনে আসে। বিহারের হোমগুলিতে অডিটের কাজ করছিল তারা। হোমেরই বেশ কয়েক জন আবাসিকের সঙ্গে কথা বলার পরই তারা জানতে পারেন ধর্ষণের কথা, নারকীয় পরিস্থিতির কথা।বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। নড়েচড়ে বসে রাজ্য ও জেলা প্রশাসন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে কয়েক জন সরকারি আধিকারিকও রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি হয়েছে। আরও প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। যে মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে এসেছে তাতে জানা গিয়েছে যে সব আবাসিকদের ধর্ষণ করা হয়েছে তাদের বয়স ৭ থেকে ১৬ বছর।
আরও পড়ুন: ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে পিটিয়ে খুন মধ্যপ্রদেশে
এই ঘটনা সামনে আসার পরই রাজ্য রাজনীতি বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে। আরজেডি এই ঘটনার জন্য নীতীশ সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছে। অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকারও। তেজস্বী যাদববলেন, “গত মার্চ থেকে রাজ্য সরকার মুজফ্ফরপুরের এই হোমের ধর্ষণের ঘটনা জানত। এই ঘটনার সঙ্গে অনেক রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক আধিকারিক জড়িয়ে আছেন। এত কিছু জানা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা তো নেয়নি সরকার, উল্টে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’’
আরও পড়ুন: ভারতীয় জনতার বন্ধু শিবসেনা, পার্টির নয়, বিজেপিকে তোপ উদ্ধবের