উলঙ্গ করে চলত মারধর। কখনও যৌনাঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হত ডাম্বল। সে সব মুহূর্তের ভিডিয়োও ধরে রাখা হত ক্যামেরায়। এ ভাবেই মাসের পর মাস ধরে জুনিয়রদের র্যাগিং করে আসছিলেন কেরলের মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের পাঁচ পড়ুয়া। সেই অত্যাচারের বর্ণনা প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠছেন আট থেকে আশি।
সম্প্রতি কেরলের কোট্টায়মের এক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কলেজের প্রথম বর্ষের তিন পড়ুয়া পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, গত মাস কয়েক ধরে তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছিলেন কলেজেরই তৃতীয় বর্ষের পাঁচ ছাত্র। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্ত ছাত্রদের গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত পাঁচ জনই তৃতীয় বর্ষের নার্সিং পড়ুয়া। সকলেই তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন:
২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়েছিল অত্যাচার। অভিযোগ, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে উলঙ্গ করে রাখা হত। তার পর যৌনাঙ্গ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হত ডাম্বল। কখনও আবার জ্যামিতি বাক্সের কম্পাসের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা হত দেহ। তার পর ক্ষতে মলমের প্রলেপ লাগিয়ে দেওয়া হত। ছাত্রেরা কেউ যন্ত্রণায় চিৎকার করলে মুখের ভিতরেও ঢেলে দেওয়া হত মলম। আর প্রতিটি অত্যাচারের ভিডিয়ো সিনিয়র পড়ুয়ারা মোবাইলবন্দি করে রাখতেন বলে অভিযোগ। কখনও কখনও কেড়ে নেওয়া হত টাকাপয়সাও। প্রতি রবিবার হস্টেলে মদের আসর বসত। আর মদ কেনার টাকা তোলা হত জুনিয়র ছাত্রদের থেকে। এ সবের পাশাপাশি, মুখ না খোলার জন্যও লাগাতার হুমকি দেওয়া হত জুনিয়রদের।
আরও পড়ুন:
সরকারি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে ছাত্রদের উপর অত্যাচারের বিবরণ প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, মাত্র ১৫ দিন আগেই কোচিতে সিনিয়র পড়ুয়াদের র্যাগিংয়ের জেরে আত্মঘাতী হয়েছে এক স্কুলছাত্র। গত বছরের শেষেও র্যাগিংয়ের জেরে গুজরাতের এক মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল ওই পড়ুয়াকে। ওই ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশ। তার আগের বছর কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও র্যাগিংয়ের জেরে মৃত্যু হয়েছিল প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার।