কুলবদনদেবী
রাজনীতির রাশ তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে গোটা বিশ্বে। ঠিক সেই সময়ই বিহারের প্রত্যন্ত গ্রাম অন্য নজির গড়ল।
পঞ্চায়েত ভোটে বছর তিরিশের প্রার্থীর পাশে না দাঁড়িয়ে ৮৬ বছরের কার্যত চলৎশক্তিহীন বৃদ্ধাকে বেছে নিলেন গ্রামবাসীরা। রাজধানী পটনা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে মসৌড়ি ব্লকের বিররা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটের ফলাফল হয়েছে এমনই।
১০টি গ্রামকে নিয়ে তৈরি হওয়া ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন কুলবদনদেবী। ভোটযুদ্ধে তিনি হারিয়েছেন বছর তিরিশের নাজমি পারভিনকে। তাঁর জয়ে অবাক জেলা প্রশাসনের কর্তারাও।
সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না কুলবদনদেবী। বয়সের ভারে কোমর বেঁকে গিয়েছে। অনেক বছর আগেই কুঁচকে গিয়েছে গায়ের চামড়া। সেই কুলবদনদেবী কী ভাবে ১০টি গ্রামের উন্নয়নের কাজ সামলাবেন, তা নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় রয়েছেন সরকারি আমলারা। সদ্যনির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য বয়সের ভার উন্নয়নের উপর চেপে বসবে না বলে একশো শতাংশ নিশ্চিত। তিনি বলছেন, ‘‘এখনও আমার অনেক শক্তি রয়েছে। তা না হলে কি আর ভোটে লড়তে নামতাম? জীবনে কখনও তীর্থ করিনি। এখন মানুষের সেবা করে পূণ্য অর্জন করব।’’ প্রধান হওয়ার পরই গ্রামের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা এবং পঞ্চায়েতের নতুন বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করছেন কুলবদনদেবী।
গ্রামবাসীরাও কুলবদনের জয়ে খুশি। তাঁর বয়স নিয়ে ভাবতে রাজি নন কেউ-ই। কলেজ-পড়ুয়া রূপম কুমারী বলেন, ‘‘নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্যই তো সবাই ওঁকে ভোট দিয়েছেন।’’ ব্যবসায়ী রাঘবেন্দ্র কুমারের কথায়, ‘‘জীবনে অনেক কিছু চোখের সামনে দেখেছেন কুলবদনদেবী। সেই অভিজ্ঞতার জন্যই ভোট পেয়েছেন।’’
বিহারে এ বছর মে মাসে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। প্রশাসনিক হিসেবে, রাজ্যের ৩৯টি জেলার ৮ হাজার ৪০৫টি পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রধানদের গড় বয়স ৪০ বছরের কাছাকাছি। তা-ই জয়ীদের তালিকায় কুলবদনদেবীর নাম থাকাটা নজির তো বটেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy