নাগাল্যান্ডের কোহিমায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল করিমগঞ্জের এক যুবকের। থানায় পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল সে রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, করিমগঞ্জের কটনপুর গ্রামের বাসিন্দা জালালউদ্দিনকে মোবাইল চুরির অভিযোগে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেই তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়। তবে পুলিশের দাবি, ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
উল্লেখ্য, বছরখানেক আগে জেল থেকে বের করে গণপ্রহারে খুন করা হয়েছিল ধর্ষণে অভিযুক্ত করিমগঞ্জের ভাঙ্গা এলাকার যুবক শরিফউদ্দিনকে। এ বার যেন সে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল কোহিমায়। প্রতিবাদে আজ করিমগঞ্জে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিভিন্ন জায়গায় রাজপথে নেমে বিক্ষোভ দেখান জেলার বাসিন্দারা। অবরোধ করেন অসম-ত্রিপুরা জাতীয় সড়ক। ভাঙ্গার শরিফউদ্দিন নাগাল্যান্ডে গাড়ির ব্যবসা করতেন। কটামনির কটনপুর গ্রামের জালালউদ্দিনও পেশায় গাড়ির মেকানিক। দু’জনের মৃত্যুর ঘটনাও প্রায় একই রকম। মোবাইল চুরির অভিযোগে ২৮ অক্টোবর কটনপুর গ্রামের জালালকে কোহিমা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে রহস্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় পর্যন্ত পুলিশ নিহতের ভাই আনসার আলিকে জানিয়েছিল, জালালকে অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার পরই অনেক কিছু জানতে পারেন জালালের ভাই। তাঁর অভিযোগ, কোহিমা হাসপাতাল থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে— জালালকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসার আধঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর দেহে আঘাতের চিহ্ন। পরিবারের লোকদের অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কী অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তাঁকে থানায় ডেকে আনা হয়েছিল, তা দেখতে চাইলে কিছু দেখাতে পারেনি কোহিমা পুলিশ। এমনকি মোবাইল চুরির অপরাধে তাঁকে থানায় যে আনা হয়েছিল সে বিষয়েও কোন কাগজ বা অভিযোগকারীর নাম পুলিশ বলতে পারেনি। বিশেষ কোনও কারণে থানায় এনে তাকে পিটিয়ে হত্যা করানো হয়েছে বলে নিহতের ভাই আনসার আলি অভিযোগ করেন।
আজ কোহিমা থেকে মৃতদেহটি করিমগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। নাগাল্যান্ডে প্রতিনিয়ত বঙ্গভাষীদের উপর আক্রমণের ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন করিমগঞ্জের লোকজন। মাদ্রাসা ছাত্র সংস্থা-সহ বিভিন্ন সংগঠন টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করে। সেইসঙ্গে তারা অসম-ত্রিপুরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাগাল্যান্ড থেকে বঙ্গভাষীদের সরে আসতে বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করা হয়। পুলিশের মদতে কিছু কিছু যুবক এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে থাকে। সাধারণ থেকে সাধারণ ঘটনায় বঙ্গভাষীদের খুন করতে পিছপা হয় না তারা। শরিফউদ্দিনের পর চান্দখিরাবস্তির গিয়াসউদ্দিনকে জ্যান্ত কবর দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ বার কটামনির কটনপুর গ্রামের জালালউদ্দিনকে থানায় খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলনকারীরা। নাগাল্যান্ড পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy