১১ বছরের মূক ও বধির মেয়েটির জ্বলন্ত চিতার সামনে দাঁড়িয়ে তার ধর্ষককে খুঁজে বার করার শপথ নিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজগড়ের এসপি আদিত্য মিশ্র। তদন্তে নেমে ১৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার হল অপরাধী।
পুলিশ জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি রাজগড় জেলার নরসিংহগড় শহরে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। পরের দিন কাছের একটি জঙ্গল থেকে গুরুতর জখম জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। তদন্তে নেমে রমেশ খাটি নামে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রমেশ আগেও দু’বার নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় জেল খেটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা মারা গিয়েছেন আগেই। মা নেই। ঠাকুমা আর অসুস্থ এক কাকা-কাকিমার বাড়িতে থাকত সে। তবে নির্যাতনের পরেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি বাড়ির লোকেরা। ইতিমধ্যে শিশুটির রক্তভেজা পোশাক দেখে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সন্দেহ হয়। তিনি পুলিশে খবর দেন। ঘটনার দু’দিন পরে ভোপালের এক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৬ দিন তাকে ভেন্টিলেটরে রেখেও বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটিকে ধর্ষণের পরে নির্যাতন করা হয়েছে। গোপনাঙ্গে গভীর ক্ষত মিলেছে।
মেয়েটিকে বাঁচাতে পারবেন, এই আশায় শেষের দু’দিন টানা হাসপাতালেই পড়ে ছিলেন এসপি মিশ্র। কিন্তু মূক ও বধির শিশুটি মৃত্যুর আগে কিছুই বলে যেতে পারেনি পুলিশকে। মৃত্যুর পরে অনাথ মেয়েটিকে দাহ করেন পুলিশকর্মীরাই। ২০ সদস্যের সিট গড়েন এসপি।
এর পরে ১৬ দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে রমেশকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় নজরদারি চালিয়ে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে রমেশের উপরে পুলিশের সন্দেহ হয়। তত ক্ষণে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ জানায়, চারশোর বেশি মানুষকে প্রশ্ন করে, চার হাজার ঘণ্টারও বেশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে, ৯টি জেলা ও ১৭টি রেলস্টেশনে নজরদারি চালিয়ে শেষে প্রয়াগরাজ স্টেশনে রমেশের উপস্থিতি জানতে পারে পুলিশ। কুম্ভের ভিড় ছুঁয়ে রমেশ তত ক্ষণে রাজস্থানের সীমানায় ঢুকে পড়েছে। সেখান থেকে শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় অপরাধ কবুল করেছে রমেশ।
২০০৩-এ ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রমেশের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০১৪ সালে জেল থেকে বেরিয়ে সেহোর জেলায় ফের ৮ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে সে দোষী সাব্যস্ত হয়। নিম্ন আদালত তাকে ফাঁসির সাজা দেয়। তবে হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালে ছাড়া পায় রমেশ। কোর্টের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে এখনও মামলা চলছে। সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)