Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Tawang Clash

তাওয়াং প্রসঙ্গে  মোদীকে আক্রমণ আপ, কংগ্রেসের

পাশাপাশি লাদাখে চিনের সঙ্গে ভারতীয় সেনার ১৬ রাউন্ড আলোচনার পরেও কেন ডেপসাং-সহ একাধিক এলাকায় চিন সেনা ভারতীয় জমি দখল করে বসে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জয়রাম।

গত শুক্রবার আচমকাই অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে হামলা চালিয়েছিল চিন সেনা।

গত শুক্রবার আচমকাই অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে হামলা চালিয়েছিল চিন সেনা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১৯
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের বেজিং প্রশ্নে নরম মনোভাবের কারণেই চিন সেনা সীমান্তে বারংবার আগ্রাসনের সাহস দেখাচ্ছে বলে আজ আক্রমণ শানিয়েছেন আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। দু’দলের অভিযোগ, চিনের চাপেই সীমান্ত আগ্রাসন লঘু করে দেখাতে চাইছে শাসক শিবির এবং সীমান্তের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অন্ধকারে রাখছে দেশবাসীকে। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছে বিজেপি।

গত শুক্রবার আচমকাই অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে হামলা চালিয়েছিল চিন সেনা। বিষয়টি নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে বললেও, চিনের আগ্রাসনের প্রশ্নে আলোচনার দাবিতে সরব বিরোধীরা। কিন্তু সরকার পক্ষ সেই আলোচনার দাবি মানতে নারাজ। সরকারের ওই মনোভাবের সমালোচনা করে আজ সরব হয়েছেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। আজ দলের একটি বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘চিন সীমান্তে একের পর এক আগ্রাসন করে চলছে, আর শাসক দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে উল্টে পুরস্কৃত করে যাচ্ছে।’’ কী সেই পুরস্কার? কেজরীওয়ালের দাবি, ‘‘ফি বছর আমাদের সঙ্গে চিনের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০-২১ সালে চিন থেকে আমরা ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের জিনিস কিনেছি। যখন সীমান্তে চিনের আগ্রাসন চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল, সেই ২০২১-২২ সালে চিনের সঙ্গে আমাদের আমদানি বাণিজ্য বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। আমরা কি নিজেদের প্রয়োজনীয় বস্তু নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারি না? মূল সমস্যা হল মোদী সরকার সেনাদের স্বার্থের কথা ভাবেন না।’’

সংসদে চিন প্রসঙ্গে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে আজ সরব কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘১৯৮৬ সালে তাওয়াং এলাকায় চিনের আগ্রাসনের পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সেখানে সেনা মোতায়েন করেছিলেন। তারপরেও কী ভাবে চিন সেখানে ফের হামলার সাহস করে?’’ সরকার সব কিছু লুকিয়ে রাখার মনোভাব চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন জয়রাম। তাঁর কথায়, অতীতে ১৯৬৫, ১৯৭১ কিংবা ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের পরে তৎকালীন সরকার বিতর্কিত স্থলে সাংবাদিক ও সাংসদদের নিয়ে যেতেন। এমনকি, ডোকলাম নিয়েও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছিল। জয়রামের প্রশ্ন, এখন সংসদে আলোচনা হতে সমস্যা কোথায়? প্রধানমন্ত্রী এ সব নিয়ে আলোচনা না করে দেশবাসীর কাছে কী লুকোতে চাইছেন?’’

পাশাপাশি লাদাখে চিনের সঙ্গে ভারতীয় সেনার ১৬ রাউন্ড আলোচনার পরেও কেন ডেপসাং-সহ একাধিক এলাকায় চিন সেনা ভারতীয় জমি দখল করে বসে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জয়রাম। একই সঙ্গে ভারতীয় বায়ুসেনায় ১২ স্কোয়াড্রন কম বিমান থাকা, সাবমেরিন কেনার প্রশ্নে দেরি কেন হচ্ছে তা নিয়েও সরকারের জবাবদিহি চেয়েছেন কংগ্রেসের ওই নেতা। জয়রামের কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেই মোদীজি, আপনি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা বলেছিলেন। সেই বন্ধুত্বের কারণেই কি চিন আগ্রাসনের সাহস দেখাচ্ছে। তা হলে কি ধরে নিতে হবে, আপনি ২০১৩ সালে যে বলেছিলেন, সমস্যা সীমান্তে নয়, সমস্যা রয়েছে মূলত দিল্লিতে—সেই কথাই ঠিক!’’

বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘এক দিকে রাহুল গান্ধী চিনের শাসকের ভাষায় কথা বলেন। খাটো করেন ভারতীয় সেনাদের কৃতিত্বকে। অন্য দিকে, ভিকার রসুল ওয়ানিকে জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়, যাঁর সঙ্গে লস্কর-ই-তইবার পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে চিন ও পাকিস্তানের যোগসূত্রের আর কী বড় প্রমাণ হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tawang Clash Narendra Modi BJP Congress AAP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE