অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ফাইল চিত্র।
সরকারি খরচে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং বিনামূল্যে গৃহস্থকে বিদ্যুৎ দেওয়ার সমীকরণ ইতিমধ্যেই সফল দিল্লি ও পঞ্জাবে। গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগের প্রচারেও আম আদমি পার্টির সেই সমীকরণ আশাতীত সাড়া পাচ্ছে। এ বার তাই নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে গোটা দেশে ওই একই সূত্র প্রয়োগের ডাক দিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সূত্রের মতে, গুজরাত বিধানসভার পরেই কেজরীওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যে (‘এ কে’ ফর পিএম) প্রচারে নামতে চাইছেন আপ নেতৃত্ব। যদিও আজ ফের কেজরীওয়ালের ‘খয়রাতির সংস্কৃতি’ নিয়ে সরব হয়ে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ওই নীতি দেশের সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।
আজ দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে দলের এক বৈঠকে ভারতকে বিশ্বের এক নম্বর দেশ বানানোর ডাক দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। মূলত পাঁচ দফা নীতিকে সামনে রেখে দলীয় কর্মীদের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। প্রথম নীতি— বিনামূল্যে শিক্ষা। কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্যই হবে দেশের প্রতিটি পড়ুয়াকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া। তার জন্য যে খরচ হবে, তা সরকার বহন করবে।’’ শিক্ষার পরেই স্বাস্থ্য। কেজরীওয়াল জানান, দেশের প্রতিটি মানুষকে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসাই হবে দ্বিতীয় লক্ষ্য। প্রথম দু’টি লক্ষ্য পূরণে দেশের প্রতিটি কোনায় সরকারি বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মহল্লা ক্লিনিক স্থাপনে জোর দেন তিনি।
বেকারত্ব এ দেশের সব থেকে বড় সমস্যাগুলির অন্যতম। তাই দেশের প্রতিটি যুবককে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া তাঁর তৃতীয় লক্ষ্য বলে জানান কেজরীওয়াল। চতুর্থ লক্ষ্য, দেশের প্রতিটি নারীর ক্ষমতায়ন, তাঁদের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ তৈরি। পঞ্চম লক্ষ্য হিসেবে কৃষকদের ঋণ মকুব ও তাঁদের আয় বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন কেজরীওয়াল। বলেছেন, ‘‘ওই পাঁচটি লক্ষ্য পূরণ করা গেলে ভারতকে বিশ্বের এক নম্বর দেশ হয়ে ওঠা থেকে কেউ রুখতে পারবে না।’’
আজ দেশবাসীর উদ্দেশে রাখা কেজরীওয়ালের এই পাঁচ দফা নীতিকে অবশ্য খয়রাতির রাজনীতি বলেই দাগিয়ে দিতে চেয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির দিল্লির সাংসদ মনোজ তিওয়ারির কথায়, ‘‘এ ভাবে খয়রাতির রাজনীতি করে দেশের অর্থনীতিকে পথে বসাতে চাইছেন কেজরীওয়াল। দিল্লিই এর প্রকৃত উদাহরণ। কেবল বিদ্যুতে ভর্তুকি দিতে গিয়ে দিল্লির কোষাগারের অবস্থা বেহাল হয়ে গিয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বিভিন্ন খয়রাতি প্রকল্পকে চিহ্নিত করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও ওই রাজ্যগুলির কোষাগারের হাল নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছিল। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে সে দেশের আর্থিক সঙ্কটের উদাহরণ তুলে ধরে রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্ক করেছিলেন। যদিও বিরোধীদের পাল্টা যুক্তি, যখন কেন্দ্র আমজনতাকে আর্থিক সাহায্য করে থাকে, তখন কোনও সমস্যা হয় না। রাজ্য একই কাজ করতে চাইলেই তাকে খয়রাতির রাজনীতি বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy