Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রেলে অগ্রিম আয়ই মস্ত বোঝা হয়ে উঠবে নতুন মন্ত্রীর

রেল সূত্রের খবর, বিগত আর্থিক বছরে নানা ক্ষেত্রে নিজেদের সাফল্যের কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করলেও নিজেদের আয়ের ভাঁড়ার তারা ভরাতে পারেনি। গত ডিসেম্বরে পরিস্থিতি এমন হয় যে, দেখা যায়, প্রতি ১০০ টাকা আয় করার জন্য রেলকে ১১০ টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে!

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৯ ০৩:১৭
Share: Save:

রেলে বিগত বছরে আয়-ব্যয়ের অনুপাতের স্বাস্থ্য ফেরাতে আদায় করা অগ্রিম আয়ের টাকাই নতুন সরকারের কাছে বিপুল দায় হয়ে দেখা দিতে পারে। পণ্য পরিবহণ খাতে অগ্রিম বাবদ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে আদায় করা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি নতুন রেলমন্ত্রী কী ভাবে সামাল দেন, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রেল দফতরের আনাচেকানাচে। রেলকর্তাদের একাংশ সমস্যা সামলে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও সংশয় কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

রেল সূত্রের খবর, বিগত আর্থিক বছরে নানা ক্ষেত্রে নিজেদের সাফল্যের কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করলেও নিজেদের আয়ের ভাঁড়ার তারা ভরাতে পারেনি। গত ডিসেম্বরে পরিস্থিতি এমন হয় যে, দেখা যায়, প্রতি ১০০ টাকা আয় করার জন্য রেলকে ১১০ টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে! পরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও হলেও আয়ের অনুপাতে ব্যয়ের অঙ্ক বেশিই ছিল। বাজেটে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৯৬ টাকায় নামিয়ে আনার জন্য বাড়তি টাকা জোগাড়ের চেষ্টায় নামতে হয় রেলকে।

মূলধনী খাতে বিপুল ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াও যাত্রী পরিবহণ খাতে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির ধাক্কা আগে থেকেই ছিল। তার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন এবং স্টেশন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আশানুরূপ আয় না-হওয়ায় রেলের চাপ আরও বেড়ে যায়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়লা, ইস্পাতের মতো পণ্য পরিবহণকারী সংস্থাগুলির কাছে ভাড়া না-বাড়ানোর শর্তে অগ্রিম টাকা আদায়ের পথে নামে রেল। সারা দেশের প্রায় ৫০টি সংস্থাকে ওই সুবিধে দেওয়ার কথা জানানো হয়। ওই সংস্থাগুলির প্রতিটিই বছরে পণ্য পরিবহণ খাতে রেলকে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ভাড়া মেটায় বলে

খবর। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশেষ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে রেল। সারা বছর বিপুল পরিমাণে পণ্য পরিবহণ করে, এমন সংস্থাগুলিকে অগ্রিম দেওয়ার শর্তে বছরভর ভাড়া না-বাড়ানোর সুবিধে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে তারা।

ওই সব সংস্থার তালিকায় ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি), স্টিল অথরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং কন্টেনার কর্পোরেশনের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাও রয়েছে। রেলের খবর, ঘাটতি থাকা টাকার অঙ্কের বেশির ভাগই জোগান দিয়েছে এনিটিপিসি এবং কন্টেনার কর্পোরেশন। এনটিপিসি একাই প্রায় ১০ হাজার কোটি এবং কন্টেনার কর্পোরেশন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা দিয়েছে রেলকে। বিগত আর্থিক বছরে ওই টাকা আয় হিসেবে দেখানো হলেও চলতি আর্থিক বছরে তা অবশ্যম্ভাবী ঘাটতি হয়ে দেখা দেবে। রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য ধরে রাখতে নতুন রেলমন্ত্রী কী ভাবে ওই বিপুল ঘাটতি সামাল দেন, সেটাই দেখার।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর (ডিএফসি) চালু হলে রেলে পণ্য পরিবহণ অনেকটাই বাড়তে পারে। সার্বিক ভাবে পণ্য পরিবহণ বাড়াতে রেলের সব জ়োনকেই উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Rail Financial Burden Freight
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE