Advertisement
E-Paper

এক বছর পার হলেও দুর্নীতিতে লাগাম টানতে ব্যর্থ মোদী সরকার

বিজেপি নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিরোধীরা যখন সংসদ অচল করে রেখেছে, সেই সময় সরকারিতন্ত্রের নিচুতলার দুর্নীতিতেও উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সরকারের এক বছর কেটে গেলেও এখনও সেই দুর্নীতিতে পুরোদস্তুর লাগাম কষা সম্ভব হয়নি।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৫ ১৮:৩৩

বিজেপি নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিরোধীরা যখন সংসদ অচল করে রেখেছে, সেই সময় সরকারিতন্ত্রের নিচুতলার দুর্নীতিতেও উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সরকারের এক বছর কেটে গেলেও এখনও সেই দুর্নীতিতে পুরোদস্তুর লাগাম কষা সম্ভব হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় সূত্রের মতে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু গত বছরে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার থেকে যে পরিমাণ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়েছে, সেটি ইউপিএ জমানার থেকেও বেশি। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তাতে স্পষ্ট এই দুর্নীতিতে এখনও পুরোদস্তুর লাগাম কষা সম্ভব হচ্ছে না। এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, সরকার ও প্রশাসনের অভিধান থেকে তিনি ‘দুর্নীতি’ নামক শব্দটি মুছে দিয়েছেন। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে, মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিলেও বাস্তব চিত্রটি ভিন্ন।

প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, ইউপিএ জমানায় ২০১৩ সালে যেখানে ৫,৪২৩টি অভিযোগ এসেছিল, সেটি গত বছর বেড়ে দাঁড়ায় ৫,৪৯২-তে। এ বছর জুন মাস পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে ২৩৫৭টি। এ ভাবে চলতে থাকলে বছরের বাকি সময়ে দুর্নীতির অঙ্ক পাল্লা দেবে বিগত বছরগুলির সঙ্গে। যদিও সরকারের দাবি, অভিযোগ বৃদ্ধি হওয়ার কারণ ভিন্ন। এই সরকার দুর্নীতি রোধের ব্যাপারে আরও অনেক বেশি সজাগ। তাই দুর্নীতির অভিযোগও যেমন সামনে আসছে, তেমনই এর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনার কে ভি চৌধুরী জানিয়েছেন, অতীতে মামলা নিষ্পত্তির জন্য অনেক বছর লেগে যেত। কিন্তু, এখন যাতে দ্রুততার সঙ্গে সেগুলি নিষ্পত্তি করা যায়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখন দুর্নীতি বড় আকার ধারণ করার আগেই যথাযথ পদক্ষেপ করতে চাইছে সরকার। সম্প্রতি প্রায় জনা পঞ্চাশ ‘হুইসল ব্লোয়ারের’ থেকেও অভিযোগ জমা পড়েছে। দু’হাজারের বেশি অভিযোগ খতিয়ে দেখছে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন। কেন্দ্রীয় সরকারের দশটি মন্ত্রকের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে প্রায় দু’কোটি টাকা আদায়ও করা হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনার জন্য বহু প্রক্রিয়া অনলাইন করে দিয়েছেন। কিন্তু, সরকারের এক শীর্ষকর্তাই কবুল করছেন, অনলাইনের মাধ্যমে কাজে যেমন আরও গতি এবং স্বচ্ছতা আসে, তেমনই প্রযুক্তির হেরফের করাও অসম্ভব কিছু নয়। সম্প্রতি প্রযুক্তির সাহায্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার গরমিল করার দৃষ্টান্তও সামনে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ অবশ্য বলেছেন, ‘‘দুর্নীতি রোধের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েই চলছি। সরকারের দক্ষতা বাড়ানো ও দুর্নীতি রোধের জন্য আমরা অনেক পদক্ষেপ করছি। এটি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া।’’

মন্ত্রীর দাবি, ই-গভর্নেন্স আসার পর সরকারিতন্ত্রের প্রক্রিয়া আরও সরলীকরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন টেন্ডার ও অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াও কেন্দ্রীয় স্তরের নজরদারিতে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্যে সিবিআইয়ের মামলাগুলিকে তরান্বিত করার জন্য ৯২টি অতিরিক্ত বিশেষ আদালত গঠন করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই চলতি বছরে ৮১৬টি মামলায় বড় জরিমানা করা হয়েছে। মামলার গুরুত্ব বুঝে ৭৭৫টিতে ছোট জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। আর ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বছর শেষ হতে না হতে এই সংখ্যাটি আরও বাড়বে।

(শেষ)

narendra modi BJP diganta bandopadhyay new delhi corruption indi prime minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy