Advertisement
E-Paper

ফল খারাপ, স্কুলে ঝুলল তালা

মাধ্যমিক পরীক্ষার খারাপ ফলাফলে ক্ষুব্দ স্থানীয় মানুষ সরাসরি স্কুলেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন। উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে শিক্ষকদের বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটতে হয়েছে পুলিশকেও। আজ সকালে হাইলাকান্দির নিতাই নগরের ইরফান আলি মেমোরিয়াল হাইস্কুলের এই ঘটনা অভিভাবকদের ক্ষোভ ও হতাশারই বহিঃপ্রকাশ বলে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের ধারণা।

অমিত দাস

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৩২

মাধ্যমিক পরীক্ষার খারাপ ফলাফলে ক্ষুব্দ স্থানীয় মানুষ সরাসরি স্কুলেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন। উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে শিক্ষকদের বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটতে হয়েছে পুলিশকেও।

আজ সকালে হাইলাকান্দির নিতাই নগরের ইরফান আলি মেমোরিয়াল হাইস্কুলের এই ঘটনা অভিভাবকদের ক্ষোভ ও হতাশারই বহিঃপ্রকাশ বলে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের ধারণা।

বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বদরুল ইসলাম বড়ভুইয়া জানান, এ বছর এই বিদ্যালয়ের ৮১ জন ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। উত্তীর্ণ হয়েছে ৭ জন। অনুত্তীর্ণের সংখ্যা ৭৪।’’ গত ২ জুন, ফলাফল ঘোষণার পর এলাকার মানুষ বিদ্যালয়ে

গিয়ে শিক্ষকদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ফলাফল কেন এত খারাপ হয়েছে। অভিযোগ, এ নিয়ে শিক্ষকদের এক প্রস্থ শাসিয়েও এসেছিলেন তাঁরা। বুধবার বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। আজ বিদ্যালয় আরম্ভ হলে ছাত্ররা প্রার্থনা করছিলেন। সেই সময়েই বিদ্যালয় চত্বরে আস্তে আস্তে লোক জড়ো হতে থাকে। প্রার্থনা শেষ হতেই শতাধিক লোক হুড়মুড়িয়ে বিদ্যালয় ভবনে ঢুকে পড়েন। তাঁরা সোজা চলে যান টিচার্স রুমে।

প্রধানশিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘টিচার্স রুমে গিয়ে উত্তেজিত জনতা শিক্ষকদের গালাগাল দিতে থাকেন। খারাপ ফলাফলের ব্যাখ্যা চান। ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য তারা শিক্ষকদের অকর্মণ্যতা, গাফিলতিকেই দায়ী করেন।’’ শিক্ষকদের কোনও কথাই তাঁরা শুনতে চাননি। এক সময় উত্তেজিত জনতা শিক্ষকদের ঝাক্কা দিতে থাকলে আতঙ্কিত শিক্ষকরা পালাতে থাকেন। বাকি শিক্ষকদের বের করে দিয়ে উত্তেজিত অভিভাবক ও স্তানীয় মানুষ টিচার্স রুমে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর এলাকার মানুষ প্রধানশিক্ষককে ঘেরাও করে। তাঁর কাছেও খারাপ ফলাফলের কারণ জানতে চাওয়া হয়। প্রধানশিক্ষকের অভিযোগ, তাঁকে কোনও কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই হেনস্থা করতে থাকেন। পরিস্ততি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছতেই ভীত প্রধানশিক্ষক অন্য শিক্ষকদের মতোই পালিয়ে যান। ঘেরাওকারীরা প্রধানশিক্ষকের ঘরেও তালা ঝুলিয়ে দেন। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বিদ্যালয়ের গেটেও।

এরই মধ্যে কেউ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে কয়েকজন শিক্ষককে পুলিশ উদ্ধার করে। উত্তেজিত অভিভাবকদের অভিযোগ: এই বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই নিয়মিত স্কুলে আসেন না। অনেকে আবার বেসরকারি বিদ্যালয়ের সঙ্গেও যুক্ত।’’ দুই ঘেরাওকারী রহিমউদ্দিন এবং সালেহ আহমেদ বলেন, ‘‘এই শিক্ষকদের হাতে আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’’ বিদ্যালয় চত্বরে বাগ্বিতণ্ডা আর চিৎকার চ্যাঁচামেচি চলতে থাকে। হাইলাকান্দির সার্কেল অফিসার সরফরাজ হক ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় ঠিক হয়েছে, বিদ্যালয় উন্নয়ন সমিতির পরবর্তী সভায় এ নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশ শান্ত হলে বিদ্যালয়ের তালা খোলা হয়। এ দিনের ঘটনায় আতঙ্কিত প্রধানশিক্ষক বদরুল ইসলাম বড়ভুইয়া বলেন, ‘‘উত্তেজিত মানুষদের ব্যবহারে আমি মর্মাহত। তবে এ দিন যাঁরা এখানে এসে গণ্ডগোল করেছে তাঁদের অধিকাংশই অভিভাবক নন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ফলাফলে আমিও খুশি নই। তবে তার জন্য বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।’’ এ দিকে, হাইলাকান্দি জেলা হাইস্কুল শিক্ষক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আলি মাঝারভুইয়া শিক্ষক হেনস্থার নিন্দা করেছেন।

Hailakandi school teacher student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy