Advertisement
E-Paper

তাড়াহুড়ো করে কোভিড টিকা বাজারে আনা হচ্ছে, মত এমস কর্তার

কোভিড টিকা তড়িঘড়ি বাজারে আনা ঠিক হচ্ছে না বলে মনে করে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস (আইএএসসি)’-ও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ১১:০৭
এমস-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। -ফাইল ছবি।

এমস-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। -ফাইল ছবি।

ভারতে কোভিড টিকা খুব তাড়াহুড়ো করে বাজারে আনা হচ্ছে বলে মনে করেন দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)’-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। তাঁর মতে, যে অল্প সময়ের মধ্যে যাবতীয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করে স্বাধীনতা দিবসের আগেই এই টিকা বাজারে আনার ঘোষণা করা হয়েছে, তা আদৌ বাস্তবসম্মত নয়। একই বক্তব্য ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস (আইএএসসি)’-এরও।

‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)’-এর তরফে গত শুক্রবার জানানো হয়, আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যেই দেশে তৈরি প্রথম কোভিড টিকা বাজারে আনা হবে। তার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১২টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাণী ও মানুষের উপর ওই টিকার সব রকমের ট্রায়াল দ্রুত শেষ করে ফেলতে বলা হয়।

এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রবিবার এমস-এর অধিকর্তা গুলেরিয়া বলেন, ‘‘এত তাড়াহুড়ো করে কোভিডের টিকা বাজারে আনাটা ঠিক হচ্ছে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, এই টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার যথেষ্টই সম্ভাবনা রয়েছে।’’

গুলেরিয়া জানান, গবেষণা থেকে শুরু করে উৎপাদন, এই গোটা পর্যায়ে যে কোনও টিকার বাজারে আসার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই ১২ মাস থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। কারণ, বাজারে আনার আগে সেই টিকাকে প্রয়োগ করে দেখা হয় প্রথমে প্রাণী ও পরে মানুষের উপর। আর সেই পরীক্ষাটা খুব অল্প সংখ্যক মানুষের উপর করলে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনাটা কমে যায়। তাই বেশি সময় ধরে বেশি মানুষের উপর প্রয়োগ করেই যে কোনও টিকা বাজারে আনা উচিত।

আরও পড়ুন- ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বাধিক আক্রান্ত, সুস্থও হলেন চার লক্ষের বেশি

আরও পড়ুন- কন্টেনমেন্ট কমিয়ে স্বস্তি দিতে পাল্টে গেল সংজ্ঞা​

গুলেরিয়ার কথায়, ‘‘কোভিড টিকার ক্ষেত্রে আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ, এই টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আরও বেশি সংখ্যায় মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন। যেটা ভারতের এই পরিস্থিতিতে একেবারেই কাম্য নয়।’’

আইসিএমআর শুক্রবার জানায়, ‘ভারত বায়োটেক ইন্ডিয়া লিমিটেড (বিবিআইএল)’-এর সহযোগিতায় তারা কোভিডের একটি টিকা বানিয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভ্যাক্সিন’। পুণের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’ থেকে ‘সার্স-কভ-২’ ভাইরাসের স্ট্রেন নিয়ে সেই টিকা বানানো হয়েছে। প্রাণীর উপর পরীক্ষায় তা সফলও হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে এ দিন এমস-এর অধিকর্তা গুলেরিয়া বলেন, ‘‘প্রাণীর উপর পরীক্ষায় সফল হলেই সেই টিকা মানুষের ক্ষেত্রেও সমান কার্যকরী হবে, তা নয়। অনেক সময়েই দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ধরনের টিকা প্রাণীর উপর প্রয়োগে সাফল্য পেলেও পরে মানুষের উপর তা প্রয়োগ কোনও কাজই হয়নি। কখনও তার জন্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও হয়েছে মানুষের। তাড়াহুড়ো করে বাজারে আনতে চাওয়া এই কোভিড টিকার ক্ষেত্রেও সেই একই আশঙ্কা রয়েছে।

সমালোচনায় ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-ও

কলকাতা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতার সংযোজন: তাড়াহুড়ো করে বাজারে কোভি়ড টিকা আনার যে ঘোষণা করেছে আইসিএমআর, ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস (আইএএসসি)’-এর তরফেও তার সমালোচনা করা হয়েছে। আইএএসসি-র সভাপতি বিশিষ্ট এপিডিমিওলজিস্ট পার্থপ্রতিম মজুমদার বলেছেন, ‘‘যে সময়সীমার মধ্যে কোভিড টিকা বাজারে আনার ঘোষণা করা হয়েছে, তা একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। এতে মানুষকে অযথা আশান্বিত করে তোলা হচ্ছে। টিকা বাজারে আনার আগে বিভিন্ন ‘ফেজ’ (পর্যায়)-এ তার ট্রায়াল চালাতে হয়। ফেজ-ওয়ান ট্রায়ালে দেখা হয় টিকার নিরাপত্তার দিকটি। ফেজ-টু ট্রায়ালে দেখা হয় বিভিন্ন ডোজে সেই টিকা কতটা কার্যকরী হচ্ছে আর তার কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না। ফেজ-থ্রি ট্রায়ালে কয়েক হাজার মানুষের উপর সেই টিকার কার্যকারীতা ও নিরাপত্তার দিকটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। মানুষের উপর সেই টিকার কার্যকরী ট্রায়াল চালাতে হলে সুস্থ মানুষের প্রয়োজন। এই সবের জন্য অনেক ধরনের অনুমোদন প্রয়োজন। যা স্বাভাবিক ভাবেই সময়সাপেক্ষ। কোভিড টিকা বাজারে আনার জন্যও এই ধাপগুলি সঠিক ভাবে পেরতে হবে।’’

ICMR AIIMS COVID VACCINE COVAXIN Randeep Guleria CORONAVIRUS INDIA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy