পাকিস্তানের হামলার মোকাবিলায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করলেন ভারতীয় সেনার ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও)-এর লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘মাটিতে লড়াইয়ের পাশাপাশি আকাশপথে পাক ড্রোনের হামলা রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বিএসএফ। সেনার এয়ার ডিফেন্স কোরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে।’’
গত তিন দশক ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে দেশের বৃহত্তম আধাসামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রভাব ‘অপারেশন সিঁদুর’-পরবর্তী ভারত-পাক সংঘাতপর্বে দেখা গিয়েছে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। সেনার এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বারাক-৮ এবং আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র, জ়েডএসইউ-২৩-৪ শিল্কা ও বফর্স এল-৭০ বিমান বিধ্বংসী কামানের পাশাপাশি এ বার বিএসএফের ‘৯কে৩৮ ইগলা’ এবং ‘৯কে৩২ স্টেরলা’ মনুষ্যবাহিনী বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (সামরিক পরিভাষায়, ‘ম্যানপ্যাড’) পাক ড্রোন হামলা রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের আধাসেনা বাহিনীগুলির মধ্যে এক মাত্র বিএসএফেরই পৃথক গোলন্দাজ (আর্টিলারি) ইউনিট রয়েছে। ১০৫ মিলিমিটার কামান, ১২০, ৮১ এবং ৫১ মিলিমিটারের মর্টার, কাঁধে রেখে ছোড়ায় উপযোগী ভূমি থেকে ভূমি ‘কার্ল গুস্তাভ’ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে সেই তালিকায়। সেই অস্ত্রসম্ভারের মধ্যেই রয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে নির্মিত ‘৯কে৩৮ ইগলা’ এবং ‘৯কে৩২ স্টেরলা’। এক জন জওয়ান নিজের কাঁধে রেখে ছুড়তে পারেন এই ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি। শত্রুর ড্রোন, হেলিকপ্টার এমনকি নিচু দিয়ে ওড়া কম গতিবেগসম্পন্ন বিমান ধ্বংস করতে পারে এই ‘ভেরি শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’।
সাম্প্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনী ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করেছে ‘৯কে৩৮ ইগলা’ এবং তার উন্নততর সংস্করণ ‘ইগলা-এস’। গত বছর ভারতীয় সেনা পেয়েছে ‘ইগলা-এস’। জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা এবং পঞ্জাব, রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পাকিস্তানি ড্রোনের হানাদারি ক্রমশ বেড়ে চলায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে মোকাবিলার কথা বলেছিলেন। সূত্রের খবর, এর পরেই বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি জ্যামার বন্দুকের ব্যবহারও শুরু হয়েছে।