তৃণমূল সাংসদদের জোর করে বাসে তুলছে দিল্লি পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
মিছিল শুরু করেও গতকাল পৌঁছতে পারেননি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত। আজ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (পিএমও) দরজায় বিক্ষোভ পৌঁছে দিলেন তৃণমূল সাংসদরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাউথ ব্লক চত্বরে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল সাংসদরা। পিএমও-তে যাতে ঢুকে পড়তে না পারেন বিক্ষোভরত সাংসদরা, তার জন্য দ্রুত ছুটে এলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তরক্ষীরা। মিনিট দশেক তীব্র মোদী বিরোধী স্লোগান এবং নিরাপত্তরক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর তৃণমূল সাংসদরা আটক হয়েছেন দিল্লি পুলিশের হাতে। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্দির মার্গ থানায়।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি উত্তর পরিস্থিতিতে দিল্লিতে আজ বৃহস্পতিবারও যে তৃণমূলের বিক্ষোভ চলবে, তা আগেই ঘোষিত হয়েছিল। কিন্তু সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীর দফতর অভিযান করবেন, এমনটা আগে জানানো হয়নি। এ দিন সকালে প্রথমে কংগ্রেস, সপা এবং ডিএমকে সাংসদদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিল তৃণমূল সংসদীয় দল। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হয়ে যাওয়ায় ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট যেন পেশ না হয়, নির্বাচন কমিশনকে তা নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়ে আসে বিরোধী দলগুলি। কমিশন থেকে বেরিয়ে তৃণমূল সাংসদরা চলে যান দীনেশ ত্রিবেদীর ৪, লোদী এস্টেটের বাংলোয়। সেখানে বৈঠক সেরে সংসদ ভবনে নিজেদের সংসদীয় দলের দফতরে পৌঁছন তৃণমূল সাংসদরা। এর পর নয়াদিল্লির সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সিবিআই-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হবে বলে প্রথমে স্থির হয়েছিল। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত হয়, সিবিআই-এর বিরুদ্ধে নয়, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখানো হবে।
তখন দীনেশ ত্রিবেদীর বাংলোর লনে বৈঠক চলছে তৃণমূল সাংসদদের। —নিজস্ব চিত্র।
সিজিও কমপ্লেক্সে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদলে পিএমও অভিযান করার এই সিদ্ধান্ত কিন্তু আগে থেকে কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। আচমকাই সংসদীয় দলের দফতর থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা সাউথ ব্লকের দিকে মিছিল করে এগোতে শুরু করেন। পিএমও অভিযান হবে বলে তৃণমূল আগে কিছু জানায়নি, তাই পুলিশি বন্দোবস্তও খুব বেশি ছিল না। ফলে সহজেই সাউথ ব্লক চত্বরে ঢুকে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা। পোস্টার, ব্যানার তুলে ধরে তাঁরা ‘মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। পিএমও থেকে দ্রুত ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা। তৃণমূল সাংসদদের আর এগোতে দেননি তাঁরা। ফলে সাউথ ব্লকের সামনেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। দ্রুত পুলিশ পৌঁছয় পিএমও-র সামনে। কিন্তু বিক্ষোভরত সাংসদদের আটক করে বাসে তোলার চেষ্টা করতেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। বেশ কয়েকজন সাংসদকে টেনে-হিঁচড়ে বাসে তোলে দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুন: দিল্লি সরগরম, আটক তৃণমূলের ৩৪ সাংসদ
শতাব্দী রায়, দোলা সেন, কাকলি ঘোষদস্তিদার, অর্পিতা ঘোষদের সঙ্গে পুলিশ অভব্য আচরণ করেছে বলে তৃণমূলের দাবি। শতাব্দী রায় বলেন, ‘‘মহিলা পুলিশ না এনে যে ভাবে মহিলা সাংসদদের জোর করে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশ বাসে তুলেছে, তা অত্যন্ত আপত্তিকর। যে এলাকায় বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, সেটি পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানার অন্তর্গত। কিন্তু আটক তৃণমূল সাংসদদের সেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়নি। বেশ কিছুটা দূরের মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের আপাতত আটকে রেখেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy