ডিসেম্বরের শেষ মানেই বাঙালির চেনা গন্তব্য দিঘা। আগামী ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি এবং ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ‘দিঘা বিচ ফেস্টিভ্যাল’ ও বর্ষবরণ ঘিরে এ বারও বছরের শেষ ক’টা দিন সৈকত শহরে আছড়ে পড়তে চলেছে পর্যটকদের ভিড়। এই বিপুল জনজোয়ারে যাতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ভেঙে না পড়ে, তার জন্য এখন থেকেই ময়দানে নেমেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। সোমবার প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উৎসবের দিনগুলিতে দিঘায় যথেচ্ছ যান চলাচল করবে না। বিশেষ করে অটো ও টোটোর দাপট নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।
সোমবার তমলুকের নিমতৌড়িতে পুলিশ লাইনের সম্মেলনকক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কাঁথি) অতীশ বিশ্বাস। ওই বৈঠকেই দিঘার জন্য একটি বিশেষ ‘গাইড ম্যাপ’ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জানান, এ বারও বড়দিন এবং বছরের শেষ ক’টা দিন সৈকত শহরে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হবে। আগামী ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি এবং ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ‘দিঘা বিচ ফেস্টিভ্যাল’ ও বর্ষবরণ উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরের প্রবেশ পথেই কড়াকড়ি শুরু হবে। দিঘা গেটের বদলে বাইপাস রাস্তা দিয়েই পর্যটকবাহী গাড়িগুলিকে যাতায়াত করতে হবে।
পর্যটকদের সুবিধার্থে ছোট গাড়ি রাখার জন্য শহরের সাতটি জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া বড় বাস ও টুরিস্ট ভ্যান রাখার জন্য হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের পাশের মাঠে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বারের বাড়তি আকর্ষণ জগন্নাথ মন্দির। পুলিশের অনুমান, দিঘা ভ্রমণের ফাঁকে মন্দির দর্শনে ভিড় উপচে পড়বে। তাই মন্দির সংলগ্ন রাস্তায় যাতে কোনও জট না তৈরি হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। পর্যটকদের ভোগান্তি কমাতে মূল রাস্তাগুলিতে টোটো ও অটোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।
জেলা প্রশাসনের আশ্বাস, উৎসবের দিনগুলিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে পুলিশি টহলদারিও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দিঘার রাস্তা যাতে যানজটমুক্ত থাকে, তার জন্য আগের থেকেই সব রকম প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বলেন, “পর্যটকদের সুরক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ানো নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার। যানজট রুখতে যে গাইড ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে, তা কড়াকড়িভাবে কার্যকর করা হবে।” সব মিলিয়ে, ভিড়ের চাপে দিঘা যাতে স্তব্ধ না হয়ে যায়, তা র জন্য এখন থেকেই সতর্ক প্রশাসন।