সরকারি জমি কিনে বিপাকে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের পুত্র পার্থ। পুণেতে তাঁর সংস্থা যে জমি কিনেছিল, তা বেআইনি ভাবে কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও অজিত জানিয়েছেন, জমি কেনার ওই চুক্তি বাতিল হয়েছে। কিন্তু বাতিল হলে অজিত-পুত্রকে গুনতে হবে ৪২ কোটি টাকা!
প্রশাসনিক এক কর্তার দাবি, পার্থের ওই সংস্থাকে সাত শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে। অর্থাৎ, চুক্তি বাতিল করতে চাইলেও ওই কোম্পানিকে অতিরিক্ত সাত শতাংশ গুনতে হবে। কেন অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ওই কর্তা। তিনি জানান, যখন ওই বিতর্কিত জমি কেনা হয়েছিল, তখন জানানো হয়েছিল সেখানে ডেটা সেন্টার তৈরি করা হবে। সেই কারণে স্ট্যাম্প ডিউটি ছাড়ের দাবিও করা হয়।
যুগ্ম সাব-রেজিস্ট্রার এপি ফুলাওয়ারে তাঁর নির্দেশনামায় জানিয়েছেন, সাত শতাংশ হারে শুল্ক দেওয়া আবশ্যক। তবে ওই জমির দলিল যদি বাতিল করতে হয়, তবে উক্ত সংস্থাকে অতিরিক্ত সাত শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। ওই নির্দেশনামায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছ, স্ট্যাম্প ডিউটি পরিশোধের পরই বাতিল করা হবে দলিলটি।
অজিত-পুত্রের জমি দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম মরাঠাভূমের রাজনীতি। বিতর্কের সূত্রপাত পুণের মুন্ধওয়ায় একটি সরকারি জমি কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, ওই জমি বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হয়। আর তা কেনে অজিত-পুত্রের সংস্থা। শিবসেনা (ইউবিটি) এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, পুণেতে যে জমি বিক্রি করা হয়েছে, তার মূল্য প্রায় ১,৮০০ কোটি টাকা। খাতায়কলমে তা কম করে দেখানো হয়েছে। পার্থের সংস্থা আমেডিয়া এন্টারপ্রাইজ়কে মাত্র ৩০০ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। ২১ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ডিউটিও মকুব করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন যদি ওই জমি বিক্রির চুক্তি বাতিল করতে হয় তবে, দ্বিগুণ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে আমেডিয়া এন্টারপ্রাইজ়কে!
বেআইনি চুক্তি এবং স্ট্যাম্প ডিউটি না দেওয়ার অভিযোগে দু’টি এফআইআর হয়েছে। তবে ওই এফআইআরে নাম নেই পার্থের। আমেডিয়া এন্টারপ্রাইজ়ে পার্থের শেয়ার রয়েছে ৯৯ শতাংশ। আর বাকি এক শতাংশ শেয়ার রয়েছে তাঁর ব্যবসায়িক বন্ধু দিগ্বিজয় পাটিলের নামে। এফআইআরে দিগ্বিজয়ের নাম থাকলে কেন পার্থের নাম নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
যদিও অজিতের দাবি, তাঁর পুত্র জানতেন না, যে জমিটা তাঁর সংস্থা কিনেছে, তা আদতে সরকারের। জমি বিতর্ক নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস জানান, এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না। তবে এফআইআর নিয়ে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নে ফডণবীস বলেন, ‘‘যাঁরা জানেনই না এফআইআর আসলে কী, তাঁরাই ভিত্তিহীন অভিযোগ করে চলেছেন। এফআইআর যখন রুজু হয়, তখন যে সব পক্ষ জড়িত থাকে, তাদের সকলের বিরুদ্ধে হয়। এই মামলায় সংস্থা এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করা হয়েছে।’’ দিগ্বিজয় ছাড়াও এফআইআরে নাম রয়েছে বিক্রেতাদের হয়ে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি নিয়ে শীতল তেজওয়ানি নামে এক ব্যক্তির। এ ছাড়াও নাম রয়েছে রাজস্ব দফতরের দুই আধিকারিকেরও।