Advertisement
E-Paper

ভুয়ো স্বীকৃতি দেখিয়ে ভর্তি নেয় পড়ুয়াদের, ফি বাবদ আল-ফালাহ্‌ লাভ করে কোটি কোটি টাকা, সেই অর্থই কি নাশকতায়!

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা তথা চেয়ারম্যান জাভেদ আহমেদ সিদ্দিকিকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রেফতার করেছে ইডি। ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৩০
দিল্লি বিস্ফোরণের পরে তদন্তকারীদের নজরে সেই আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়।

দিল্লি বিস্ফোরণের পরে তদন্তকারীদের নজরে সেই আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।

আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের থেকে ফি বাবদ যে টাকা আদায় করা হত, তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন কর্তৃপক্ষ। হরিয়ানার ফরিদাবাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে নেমে এমনটাই দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর একটি সূত্র। অভিযোগ, সরকারি স্বীকৃতি না থাকলেও তা রয়েছে দেখিয়ে লাভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ভুয়ো নথি দেখিয়ে ৪১৫ কোটি টাকা লাভ করেছে তারা। পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবকদের ভুল পথে চালিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কোটি কোটি টাকার অনুদান প্রাপ্তির হিসাব আয়করে কারচুপি করেছে বলেও অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে, সেই টাকাই কি ব্যবহার হয়েছিল নাশকতার কাজে?

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা তথা চেয়ারম্যান জাভেদ আহমেদ সিদ্দিকিকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রেফতার করেছে ইডি। ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

দিল্লি বিস্ফোরণের পরেই উঠে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ। সেই নিয়ে তদন্তে নেমেছে ইডি। তদন্তে দেখা গিয়েছে, অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) লঙ্ঘন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আয়কর রিটার্ন একটি প্যানের অধীনেই চালিত হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে একটি ট্রাস্টের হাতেই।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশ করা আয়কর রিটার্নের নথিতেও রয়েছে ‘কারচুপি’। ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে ৩০.৮৯ কোটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে ২৯.৪৮ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান পেয়েছে বলে দেখানো হয়েছে আয়কর রিটার্নে। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নিজের আয় পড়ুয়াদের পাঠদান করার বিনিময়ে রোজগার হিসাবে দেখিয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্র বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই বছর আয় ছিল ২৪.২১ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে ৮০.০১ কোটি টাকা। সাত বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয় হয়েছে ৪১৫ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাক জানিয়ে দিয়েছে, তারা কখনওই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বীকৃতি দেয়নি। ইডির সূত্র বলছে, সেই স্বীকৃতি রয়েছে দেখিয়ে পড়ুয়াদের থেকে ফি বাবদ কোটি কোটি টাকা তুলেছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, ভুয়ো স্বীকৃতি দেখাতে ভুয়ো নথি তৈরি করেও পড়ুয়াদের দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আর সে ভাবেই ‘বেআইনি রোজগার’ করেছে তারা। তদন্তে এ-ও দেখা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের থেকে নেওয়া ফির টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন কর্তৃপক্ষ। আল-ফালাহ্‌র মুখ্য অর্থনৈতিক অফিসার (সিএফও) মহম্মদ রাজ়ি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়ের সিদ্ধান্ত একাই নিতেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকি।

১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণ হয়। তাতে প্রাণ হারান ১৩ জন। বিস্ফোরক বোঝাই আই২০ গাড়িতে বসে সেটি উড়িয়ে দেন উমর উন-নবি। সেই উমর আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সহযোগী শাহিন শহিদ, মুজাম্মিস শাকিল, আদিল রাথেরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। আল-ফালাহ্‌ থেকে মেলা লাভের টাকা কি ওই অভিযুক্তদের দিতেন সিদ্দিকি? উঠেছে প্রশ্ন।

Delhi Blast ED
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy