দলিত নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। ১৭ বছর বয়সি ওই কিশোরীকে পাঁচ জন যুবক মিলে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় ইতিমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে পঞ্চম অভিযুক্ত এখনও অধরা। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী শনিবার দুপুরে তাঁর দিদির বাড়ি যাচ্ছিল। পরিচিত একজনের বাইকে চেপে দিদির বাড়ি যাচ্ছিল সে। দুপুর তখন প্রায় ১২টা। লখনউয়ের বনতারা থানা এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পের কাছে আমবাগানের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ যুবক তাদের পথ আটকায়। অভিযোগ, বাইক থামাতেই তাঁরা কিশোরীর সঙ্গে থাকা যুবককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে। তার পরে ওই পাঁচ জন মিলে কিশোরীকে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, লখনউ জেলার কৃষ্ণনগরের সহকারী পুলিশ কমিশনার বিকাশকুমার পাণ্ডে জানান, দুষ্কৃতীদের হাতে মার খাওয়ার পরে ওই যুবক সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই অভিযুক্তেরা ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার কথা জানাজানি হলে ওই দলিত কিশোরীকে খুন করে ফেলা হবে, এমনও হুমকি দেন দুষ্কৃতীরা। যদিও পরে দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে জামাইবাবুকে ফোন করে গোটা ঘটনার কথা জানায় ওই নাবালিকা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় থানায় এফআইআর রুজু হয়। শনিবার রাত থেকেই অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
এসিপি জানান, পুলিশের পৃথক পৃথক দল গঠন করে শনিবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হন দুই অভিযুক্ত। পরে বেশি রাতের দিকে বনতারা থানা এলাকারই হারোনি রেলস্টশন সংলগ্ন এলাকা থেকে দু’জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। পুলিশকে দেখে তাঁরা গুলি চালানো শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশের পাল্টা গুলি চালালে এক অভিযুক্ত গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর পায়ে গুলি লাগে। আপাতত পুলিশি নজরদারিতে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। ধৃতের থেকে একটি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
শনিবারের ওই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশে নারী নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘লখনউয়ের বনতারায় কিশোরীর গণধর্ষণের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নারীদের হেনস্থা, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা হয়েই চলেছে।’
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গেও দুর্গাপুরে এক ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনাতেও ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে আরও এক জনকে। ওই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে লখনউয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে রবিবার প্রশ্ন করা হয় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ওই জায়গাগুলোয় এগুলো ঘটলে ওরা (বিজেপি) গুরুত্ব দেয় না। সেখানে ধর্ষিতা আদালতে যাওয়ার আগেই রাস্তায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আমরা কোনও ঘটনাকেই সমর্থন করি না। আমরা এই সমস্ত ঘটনাকে রেয়াত করি না।”