Advertisement
E-Paper

অমর্ত্যের মতে, বাতিল হওয়া উচিত সিএএ

সিএএ প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, ‘‘এই আইন অসাংবিধানিক। ধর্মের সঙ্গে নাগরিকত্বকে জুড়ে মানুষের মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে ভেদরেখা টানা যায় না।’’ অতীতে সংবিধান প্রণয়নের ভারপ্রাপ্ত ‘কনস্টিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি’-তেও এটা স্থির হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা যাবে না।

সংবাদ সংস্থা 

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৯
— অমর্ত্য সেন

— অমর্ত্য সেন

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) সুপ্রিম কোর্টের বাতিল করা উচিত বলে মন্তব্য করলেন অমর্ত্য সেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈদিক গণিতকে ঢোকানোর ভাবনারও কড়া বিরোধিতা করলেন তিনি। বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ফাঁকে অমর্ত্য আজ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত জানান। জেএনইউয়ের ঘটনায় তিনি ‘হতভম্ব’। পুলিশকে জানাতে দেরি করা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিরাগতদের হামলা রুখতে ব্যর্থ। পুলিশও কাউকে ধরতে পারল না, অথচ যাঁরা মুখোশধারীদের হাতে মার খেলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই এফআইআর করল! বড় বেশি চোখে পড়ছে এই বিচারহীনতা।’’

সিএএ প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, ‘‘এই আইন অসাংবিধানিক। ধর্মের সঙ্গে নাগরিকত্বকে জুড়ে মানুষের মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে ভেদরেখা টানা যায় না।’’ অতীতে সংবিধান প্রণয়নের ভারপ্রাপ্ত ‘কনস্টিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি’-তেও এটা স্থির হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা যাবে না। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অমর্ত্য বলেন, ‘‘দেশের আইনে ধর্মীয় ভেদাভেদ করা যায় না।’’ একই সঙ্গে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ স্বীকার করেন, প্রতিবেশী দেশে নিপীড়নের শিকার হওয়া হিন্দুদের ও মানুষের দুঃখ-দুর্দশার বিষয় সহানুভূতির সঙ্গেই দেখা প্রয়োজন।

দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা থেকে শুরু করে মানুষকে হুমকির মুখে রাখা, ফোনেও সরকারের সমালোচনা করতে ভয় পাওয়ার মতো বিষয় নিয়ে মুখ খুলে বারবার নরেন্দ্র মোদী ও শাসক শিবিরের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অমর্ত্য। সিএএ এবং জেএনইউ-এ হামলার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশের নানা মহল থেকে যখন ধিক্কার উঠছে, তখন অমর্ত্যেরও এই বিষয়গুলি নিয়ে মুখ খোলাটা প্রায় প্রত্যাশিতই ছিল। এ দিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি সরব হয়েছেন তিনি। তা হল, বৈদিক অঙ্ক নিয়ে জাতীয়তাবাদীদের ‘ভিত্তিহীন দাবি’ ও ‘অপপ্রচার’। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিজ্ঞান কংগ্রেসগুলিতে বারবার পৌরাণিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, এমন সব বিষয়কে বিজ্ঞান বলে দাবি করা হয়েছে। এ বারেও যাতে তেমনটা না-হয় তাঁর জন্য বিজ্ঞানী ও যুক্তিবাদীরা আগে থেকেই সরব হয়েছেন। অমর্ত্যও তাঁদেরই দলে। দেশের পাঠক্রমে বৈদিক গণিত ঢোকানোর পক্ষে সঙ্ঘের তরফে বারবার সওয়াল করা হচ্ছে। এই ভাবনার বিরোধিতা করে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য এ দিন বলেছেন, ‘‘বৈদিক গণিত একটি অতিরঞ্জিত বিষয়। যার অনেকটাই আকাশকুসুম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গণিতের যে সূত্র মেনে চলা হয়, তার থেকে বৈদিক গণিত অনেকটাই আলাদা। একে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ঢোকালে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। জাতীয়তাবাদীদের খুশি করতেই এমন কথা ভাবা হচ্ছে।’’ বিশ্বের গণিত-চর্চায় ভারতীয় মুনি-ঋষিদের অবদান অবশ্য অস্বীকার করে না অমর্ত্য। তবে একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে সময়কে গণিতের স্বর্ণযুগ ধরে নেওয়া হয়, সেটা কিন্তু বৈদিক যুগ নয়।

CAA Amartya Sen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy