E-Paper

বঙ্গোপসাগরে আমেরিকার ঘাঁটি চাপ বাড়াচ্ছে দিল্লির

কূটনৈতিক এবং রণনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের গুরুত্ব আমেরিকার কাছে এখন বাড়ছে। ভারত মহাসাগরে চিনের সামরিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির কারণে ওই অঞ্চলে নজরদারি চালিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় আমেরিকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:১৮

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুযোগ নিয়ে বঙ্গোপসাগরে নিজেদের সমুদ্রঘাঁটি তৈরি করার জন্য উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভারত-আমেরিকা-জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া এই চারদেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর আওতার মধ্যে থেকেই এই কাজটি সারতে চাইছে ওয়াশিংটন। ‘কোয়াড পোর্টস ফর ফিউচার প্রোগ্রাম’-এরঅংশ হিসাবে আমেরিকার কর্তারা ঢাকার সংশ্লিষ্ট কর্তা ও সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করার আগে আমেরিকা একটিসমীক্ষাও করতে চলেছে বলেসূত্রের খবর।

কূটনৈতিক এবং রণনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের গুরুত্ব আমেরিকার কাছে এখন বাড়ছে। ভারত মহাসাগরে চিনের সামরিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির কারণে ওই অঞ্চলে নজরদারি চালিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় আমেরিকা। সূত্রের মতে, মূলত চিনের উপর নজরদারির জন্য কক্সবাজারে আমেরিকা সম্প্রতি সেনা মহড়া চালিয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভারতেরও চিন্তা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ওই ভৌগোলিক অবস্থান থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির উপরেও সহজেই নজরদারি করা যায়। মায়ানমারে মানবিক করিডরের বিষয়টিও আমেরিকারমাথায় আছে। নিয়মিত সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের মতো নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এই অঞ্চল আমেরিকার আগ্রহের বড় কারণ।

ঘটনা হল, উনিশ-বিশ একই উদ্দেশ্যে জাপানও বাংলাদেশের মাতারবাড়ি এলাকায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। জাপানের উদ্দেশ্য, এই এলাকায় একটি বড়মাপের শিল্পতালুক গড়ে তোলা। পাশাপাশি আঞ্চলিক পণ্য চলাচলের কেন্দ্র তৈরি করা। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যার সুবিধা পাবে বাংলাদেশও। জাপান নির্মিত ওই বন্দর ব্যবহার করে বড় জাহাজ তাদের পণ্য খালাস করে, নতুন পণ্য নিয়ে জলপথে পাড়িদিতে পারবে।

সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, ভারতও অদূর ভবিষ্যতে বেসরকারি এবং সরকারি যৌথ উদ্যোগে ওই এলাকায় একটি বন্দর তৈরির কথা ভাবছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকালীন ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মংলা বন্দরে হাতেকলমে কাজ শুরুকরার ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছিল মোদী সরকার। ২০১৮ সালেই মংলা এবং চট্টগ্রামের বন্দরের পূর্ণ ব্যবহারের ছাড়পত্র ভারতকে দিয়েছিল বাংলাদেশ।

প্রসঙ্গত শেখ হাসিনার জমানায় আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও প্রতিরক্ষা চুক্তি ছিল না। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূস গদিতে বসার পরে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ‘নন ডিসক্লোজ় এগ্রিমেন্ট’ হয়েছে। কেউ জানে না, তাতে কী শর্ত রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সামরিক মহড়া নিয়ে দিল্লির উদ্বেগের কারণ থেকেই যাচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-US India-US Relationship Bay Of Bengal Naval Exercise

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy