চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ক ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে, এই মর্মে ভারতকে কার্যত সতর্ক করল আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। গত কাল আমেরিকান কংগ্রেসে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে পেন্টাগনের তরফে। সেখানেই উল্লেখ করা হয়েছে কী ভাবে সামরিক এবং গোয়েন্দা তৎপরতার ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পোক্ত হচ্ছে ইসলামাবাদ আর বেজিংয়ের সম্পর্ক। একই সঙ্গে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক বছরে চিন যে সব দিকে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে চাইছে, তার মধ্যে রয়েছে ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের দখলে আনার লক্ষ্যও।
পেন্টাগনের ওই রিপোর্টে ভারত-চিন সম্পর্কের বিভিন্ন চাপানউতোরের ক্ষেত্রগুলির বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন সংঘর্ষের পরে ২০২৪ সালে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু’পাশ থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছিল ভারত এবং চিন। রিপোর্টে স্পষ্ট করা হয়েছে, তার কারণ ছিল এর ঠিক কয়েক দিন পরেই কাজ়ানে ব্রিকস সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেই সাক্ষাতের পর পরই দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক শোধরানোর পদক্ষেপ হিসেবে সরাসরি উড়ান পরিষেবা চালু, ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সরলীকরণ থেকে শুরু করে পড়ুয়া এবং সাংবাদিক বিনিময়ও শুরু করা হয়। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও ভারতের অঙ্গরাজ্য অরুণাচলপ্রদেশ অধিগ্রহণের প্রতি চিনের বিশেষ নজর নিয়ে নয়াদিল্লিকে বিশেষ করে সতর্ক করা হয়েছে পেন্টাগনের ওই রিপোর্টে। অরুণাচলের পাশাপাশি তাইওয়ান ভূখণ্ড ও সেনকাকু দ্বীপ দখল এবং দক্ষিণ চিন সাগরে আরও বেশি করে আধিপত্য বিস্তারও আগামী কয়েক বছরে বেজিংয়ের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
ভারতের আর এক পড়শি দেশ পাকিস্তানের সামরিক সরঞ্জাম কেনা নিয়েও বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে। গত কয়েক বছরে ইসলামাবাদকে যে ভাবে যুদ্ধবিমান, সশস্ত্র ড্রোন, আধুনিক আকাশ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বেজিং সরবরাহ করেছে, তার বিশদ বর্ণনা রয়েছে রিপোর্টে। শুধু স্থল বা আকাশপথের সুরক্ষা ব্যবস্থাই নয়, পাক নৌবাহিনীকে পোক্ত করতে আগামী পাঁচ বছরে বেশ কয়েকটি আধুনিক ডুবোজাহাজও ইসলামাবাদকে বেজিং দেবে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)