লড়াই এখনও শেষ হয়নি। প্রত্যেককে বেছে বেছে জবাব দেওয়া হবে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর জঙ্গিদের উদ্দেশে এবং ‘যারা সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে’ তাঁদের উদ্দেশে ফের কড়া বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের নিন্দায় শাহ বলেন, “ওরা যেন ভেবে না-নেয় যে ২৬ জনকে হত্যা করে এই লড়াই জিতে গিয়েছে। যারা সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশে বলছি, লড়াই এখনও শেষ হয়নি। আমরা লক্ষ্য নিয়েছি প্রত্যেককে বেছে বেছে জবাব দেওয়া হবে। তাদের থেকে উত্তর চাওয়া হবে।” সন্ত্রাসবাদীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, হামলায় জড়িত কাউকে রেয়াত করা হবে না। তাই এমন কাপুরুষোচিত হামলাকে জঙ্গিরা যেন বড় সাফল্য বলে মনে না করে, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেন শাহ।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জন নিরস্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। হামলায় জড়িত জঙ্গিরা এখনও ধরা পড়েনি। তাদের খোঁজে কাশ্মীর জুড়ে অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জঙ্গিরা এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরের কোনও অঞ্চলে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পহেলগাঁও কাণ্ডে ভারতের অভিযোগ, ওই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে। পাকিস্তান যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের দাবি তুলেছে।
আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার নিন্দায় সরব হয়েছে। তবে ভারত যে পাকিস্তানি জঙ্গিযোগের দাবি তুলেছে, সেই নিয়ে আমেরিকা বা অন্য কোনও তৃতীয় দেশ কোনও মন্তব্যই করেনি। জঙ্গিহানার নিন্দা জানালেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও দেশ প্রকাশ্যে সরব হয়নি। বুধবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা হয়েছে মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিওর। মার্কিন বিদেশ দফতরের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে সহযোগিতার কথা বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এগোনোর জন্যও ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছেন রুবিও।
বস্তুত, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্রতি রাতেই সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে নয়াদিল্লিতে ঘন ঘন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। এই অবস্থায় শাহের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।