Advertisement
E-Paper

নিশানা তৃণমূল, ১৬-র ঘুঁটি সাজাবেন অমিত

তৃণমূলকে মূল প্রতিপক্ষ করে পশ্চিমবঙ্গে ‘মিশন ২০১৬’-র প্রস্তুতি শুরু করছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লির গুজরাত ভবনে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে বিধানসভার ঘুঁটি সাজানোর নির্দেশও দেন। বাংলায় দলের রণকৌশল স্থির করতে আগামী মাসে কলকাতায় যাচ্ছেন তিনি। সঙ্ঘের সবুজ সঙ্কেতের পর আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডেকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে অমিত শাহের নাম ঘোষণা করেছেন বিদায়ী সভাপতি রাজনাথ সিংহ।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০৪:২৪

তৃণমূলকে মূল প্রতিপক্ষ করে পশ্চিমবঙ্গে ‘মিশন ২০১৬’-র প্রস্তুতি শুরু করছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লির গুজরাত ভবনে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে বিধানসভার ঘুঁটি সাজানোর নির্দেশও দেন। বাংলায় দলের রণকৌশল স্থির করতে আগামী মাসে কলকাতায় যাচ্ছেন তিনি।

সঙ্ঘের সবুজ সঙ্কেতের পর আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডেকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে অমিত শাহের নাম ঘোষণা করেছেন বিদায়ী সভাপতি রাজনাথ সিংহ। বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী, লালকৃষ্ণ আডবাণী-সহ সব শীর্ষ নেতাই উপস্থিত ছিলেন। দায়িত্ব নিয়েই অমিত শাহ দলের নেতাদের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতা দখলই তাঁর প্রথম লক্ষ্য। কিন্তু তার পর যে সব রাজ্যে ভোট আসছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমবঙ্গ। কারণ, লোকসভা ভোটে বিজেপির ভিত সেখানে তৈরি হয়েছে। লোকসভায় দুটি আসন জিতলেও বিধানসভার নিরিখে ৪৬টি আসনে বিজেপি প্রথম স্থানে। ৩০টিতে দ্বিতীয়। ফলে সর্বশক্তি দিয়ে লড়লে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে নিজেদের শক্তি বাড়াতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন শাহ। তাঁর মতে, প্রস্তুতি শুরু করবে এখন থেকেই। পশ্চিমবঙ্গে দলের সম্ভাবনা নিয়ে বিজেপি সভাপতির বিশ্লেষণ, “পক্ষে হাওয়া রয়েছে। আগামী দিনে দলের শক্তিও আরও বাড়বে।”

গত সপ্তাহেই দিল্লিতে রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করেন। তৃণমূলের হাতে বিজেপি কর্মীরা কেন আক্রান্ত হচ্ছেন, দলের শক্তি বাড়াতে রাজ্য নেতৃত্ব কী ভাবছেন, সে সব ব্যাপারে খোঁজ নেন। এখন থেকেই বুথ স্তরে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্থির হয়েছে, অগস্টে কলকাতা বা তার আশপাশে বিজেপি একটি ‘চিন্তন শিবির’-এর আয়োজন করবে। রাজ্য নেতারা ছাড়াও কেন্দ্রের কিছু নেতা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতি হওয়ার পর এটাই কলকাতায় প্রথম সফর হতে পারে অমিত শাহের। ‘মিশন ২০১৬’ নিয়েও সবিস্তার আলোচনা হবে। তৃণমূলের আক্রমণের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করবে, অন্য দলগুলি নিয়ে নিজেদের অবস্থান বা দলে নতুন যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের কোন পথে পরিচালিত করা হবে- সেই সব কিছু নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে। রাহুল সিংহকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দিল্লিতে গিয়ে আমি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য অমিত শাহকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছি।”

কেন্দ্রে মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই রাজনাথ সিংহের উদ্যোগে দু’বার কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছে রাজ্যে। তৃণমূলের আক্রমণের প্রতিবাদে ধীরে ধীরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, নরেন্দ্র মোদী যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধর্ম মেনে পশ্চিমবঙ্গকে সহযোগিতা করবেন, কিন্তু রাজনৈতিক জমি দখলে কোনও রকম আপস করা হবে না। অমিত শাহ সেই পথই ধরবেন। পাশাপাশি, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অমিত শাহের নিজস্ব শৈলী রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে ৮০টির মধ্যে ৭০টির বেশি আসন ছিনিয়ে এনেছেন। পশ্চিমবঙ্গেও এখন সেই কৌশল রূপায়িত করতে চাইছেন শাহ। তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরে খবর, ইতিমধ্যে বাংলা শেখাও শুরু করে দিয়েছেন।

বিজেপির এক নেতা বলেন, সন্দেহ নেই যে মোদী চেয়েছেন বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ অমিত শাহ আজ সভাপতি হলেন। এর ফলে সুবিধা হল, সরকার ও সংগঠন একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে। তবে কৌশলগত ভাবে সরকার ও সংগঠন পৃথক অবস্থানও নিতে পারে। মোদী বরাবরই সরকার ও সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলার কথা বলে এসেছেন। সরকারের কাজের প্রচার কিংবা মানুষের মন বোঝার জন্য সংগঠনকে প্রয়োজন। আবার সংগঠনের প্রয়োজন অনুসারেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারে। অমিত শাহকে সভাপতি করার জন্য এই যুক্তিই সঙ্ঘ নেতৃত্বকে দিয়েছিলেন মোদী। যা তাঁরা মেনে নিয়েছেন।

amit shah westbengal tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy