এক দিকে সরকার বাঁচানোর চেষ্টা, অন্য দিকে চেষ্টা ভাঙানোর। প্রথমটি গোয়া। আর দ্বিতীয়টি কর্নাটক। এই দুই ঘর নিয়েই এখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
এই মুহূর্তে শারীরিক অসুস্থতার জন্য দিল্লির এইমস (অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস)-এ ভর্তি রয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। সূত্রের খবর, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে বিজেপির শরিক দল মহারাষ্ট্র গোমন্তক পার্টি (এমজিপি)-র বিধায়ক সুধীন ধাবালিকরকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পর্রীকর। কিন্তু গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি-সহ সরকারের অন্য শরিক দলগুলো তা মেনে নেয়নি। ফলে দায়িত্ব কার হাতে দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে গেরুয়া শিবির।
এই সঙ্কটের মুহূর্তটার জন্যই যেন অপেক্ষা করেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে বিজেপির শরিকদের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’কে কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। ৪০টি আসনবিশিষ্ট বিধানসভায় ১৬টি আসন জিতে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছিল কংগ্রেস। ১৪টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তবে চূড়ান্ত নাটকীয় পর্বের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত সরকার দখলে রেখেছিল বিজেপি-ই। প্রবল বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। এখন বিজেপির সঙ্কটের মুহূর্তে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। প্রশাসন ভেঙে পড়েছে এই অভিযোগ তুলেই রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার কাছে ছুটেছে কংগ্রেস। তাদের হাতে সরকার গঠনের মতো যথেষ্ট সংখ্যা রয়েছে, এই দাবি তুলেই সরকার ভেঙে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে তারা। শরিক দলগুলো কি বিজেপির পাশ থেকে সরে দাঁড়াবে? শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। তবে গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির বিধায়ক বিজয় সরদেশাই বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। বা কেউ আসেওনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে। তবে অমিত শাহের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।” ইতিমধ্যেই অমিত শাহ ফোনে কথা বলেছেন বিজয়ের সঙ্গে। গোয়া পরিস্থিতি সামলাতে বিজেপি সভাপতি নিজেই নেমে পড়েছেন আসরে।
আরও পড়ুন: অষ্টম পাশ বিধায়কদের আয় সবচেয়ে বেশি! অন্যদের কত জানেন?
একই সঙ্গে অমিতের নজর রয়েছে কর্নাটকের দিকেও। গোয়ায় যে ভাবে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি, কর্নাটকেও সেই একই নীতি প্রয়োগের চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু সে যাত্রা বৈতরণী পার করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। দল ভাঙানোর কৌশলকে একবারে ঠুঁটো করে দিয়েছিল কংগ্রেস-জেডিএস জোট। তার পরেও বিজেপি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে না এমন নয়। রাজ্যের বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, খুব শীঘ্রই কুমারস্বামীর সরকারকে উপড়ে ফেলতে সক্ষম হবে তারা।
কিন্তু বিজেপির এত জোর দিয়ে বলার কারণ কী? তবে কি শাসক জোটে ভাঙন ধরানো কিংবা কংগ্রেস-জেডিএসের বিধায়ক ভাঙানোর মতো কোনও অবস্থা তৈরি হয়েছে? নানান সম্ভাবনার কথাই ঘোরাফেরা করছে। সূত্রের খবর, সব কিছুতে দেবগৌড়া পরিবারের ‘নাক গলানো’র বিষয়টা নাকি মেনে নিতে পারছেন না কংগ্রেসের কিছু নেতা-মন্ত্রী। এই ধরনের বিরোধকেই উস্কে দিতে চাইছে বিজেপি। কংগ্রেস অবশ্য বিজেপির দাবিকে ‘অলীক কল্পনা’ বলেই উড়িয়ে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাল্যকে আটক করতে নিষেধ করেছিল সিবিআই!
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)