Advertisement
E-Paper

পরোয়া নেই কোর্টকে, ফের মেসেজে তালাক

তিন মাস আগে তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক, বেআইনি ও ধর্মবিরুদ্ধ’ বলে খারিজ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু মুসলিম সমাজে তাৎক্ষণিক বিবাহবিচ্ছেদের সেই রেওয়াজে যে দাঁড়ি পড়েনি, তা প্রকাশ্যে এনে দিল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (আমু)-র অধ্যাপক স্বামী খালিদ বিন ইউসুফ খানের স্ত্রী ইয়াসমিনের ওই অভিযোগ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৬
অভিযোগকারিণী: ইয়াসমিন

অভিযোগকারিণী: ইয়াসমিন

টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে হাউহাউ করে কাঁদছিলেন ৫৫ বছরের মহিলা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে বলছিলেন, ‘‘আপনারা যে বলেছিলেন, মুসলিম মহিলাদের ইনসাফ দেবেন? এক জন প্রফেসর ২৩ বছরের সংসারকে দু’মিনিটে ভেঙে চলে যাচ্ছে! দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। এই বয়সে আমি কোথায় যাব?’’

তিন মাস আগে তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক, বেআইনি ও ধর্মবিরুদ্ধ’ বলে খারিজ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু মুসলিম সমাজে তাৎক্ষণিক বিবাহবিচ্ছেদের সেই রেওয়াজে যে দাঁড়ি পড়েনি, তা প্রকাশ্যে এনে দিল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (আমু)-র অধ্যাপক স্বামী খালিদ বিন ইউসুফ খানের স্ত্রী ইয়াসমিনের ওই অভিযোগ।

আরও পড়ুন: দগ্ধ নয়, সাহসের ফেস-বুক

ইয়াসমিনের দাবি, স্বামী তাঁকে হোয়াট্সঅ্যাপ এবং এসএমএসে তিন তালাক দিয়েছেন। বাড়ি থেকে বার করেও দিয়েছেন। পুলিশের সাহায্যে বাড়িতে ঢুকেছেন তিনি। কিন্তু ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে সুবিচার না পেলে ‘আমু’-র উপাচার্য তারিক মনসুরের বাড়ির সামনে তিন সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান খালিদ গত ২৭ বছর ‘আমু’-তে পড়াচ্ছেন। স্ত্রীর অভিযোগ এক রকম মেনেও নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমি শুধু ওকে হোয়াট্সঅ্যাপ ও এসএমএসেই তালাক দিইনি, আরও দু’জন ব্যক্তির উপস্থিতিতে মুখেও সে কথা বলেছি। এ ক্ষেত্রে শরিয়া-তে যে সময়সীমার কথা বলা আছে, তা-ও মেনে চলেছি।’’

তালাক কেন দিতে চান? ওই অধ্যাপকের কথায়, ‘‘কুড়ি বছর ধরে ও আমার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিয়ের আগেকার অনেক কথা লুকিয়েছিল। এমনকী বলেছিল, ও নাকি স্নাতক। আমি জানতে পারি, সেটা মিথ্যে।’’ খালিদ এ-ও বলে দিচ্ছেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময় মেনে আমি ওকে তৃতীয় বার তালাক বলব। কেউ আমায় আটকাতে পারবে না। যা করার করে নিক।’’

ইয়াসমিনের পাল্টা দাবি, তিনি শুধু স্নাতকই নন, ‘আমু’ থেকেই স্নাতকোত্তর পাশ। বিএড-ও করেছেন। তাঁর অভিযোগ, স্বামীর সঙ্গে ছাত্রীদের ঘনিষ্ঠতার খবর তিনি পেতেন। গত সেপ্টেম্বরে এই নিয়ে ‘আমু’ কতৃর্পক্ষের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। খালিদ সন্দেহ করেন, সেই অভিযোগের নেপথ্যে রয়েছেন ইয়াসমিন। তখন থেকেই নিজের এক মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে তালাক দেন হোয়াট্সঅ্যাপে, ৩০ অক্টোবর এসএমএসে।

আলিগড়ের এসএসপি রাজেশ পাণ্ডে জানান, ইয়াসমিন এখনও পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেননি। তিনি আলোচনার উপরেই জোর দিচ্ছেন। ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে পুলিশের বিশেষ কিছু করার থাকে না। তবু আমরা দু’জনকেই ডেকে পাঠিয়েছি।’’ জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেন, ‘‘ইয়াসমিনের আদালতে যাওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্টের রায় জেনেও এক জন অধ্যাপক যদি এমন করেন, তিনি ছাত্রদের কী শিক্ষা দেবেন?’’

Triple Talaq Muslim Supreme Court Unconstitutional ইয়াসমিন AMU
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy