Advertisement
০৬ মে ২০২৪

চিনা মানচিত্রে আন্দামান-নিকোবর, উস্কানির চেষ্টা বেজিং-এর, বলছে ভারত

ভারত মহাসাগর ছেড়ে এ বার বঙ্গোপসাগরের দিকেও হাত বাড়ানোর চেষ্টায় চিন। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে এ বার মানচিত্রে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করল চিন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সূত্রে খবর।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১০:৫৬
Share: Save:

ভারত মহাসাগর ছেড়ে এ বার বঙ্গোপসাগরের দিকেও হাত বাড়ানোর চেষ্টায় চিন। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে এ বার মানচিত্রে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করল চিন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সূত্রে খবর। ভারত মহাসাগরে নয়াদিল্লির প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায়, পাল্টা চাপ তৈরির করার এই নতুন কৌশল নিয়েছে চিন। মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা এবং ভারত সরকারের সচিবালয়ের প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব জয়দেব রানাড়ে জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে আন্দামান ও নিকোবরকে নিজেদের ম্যাপে দেখাতে শুরু করেছে চিন। রানাড়ে এখন ভারতের সেন্টার ফর চায়না অ্যানালিসিস অ্যান্ড স্ট্যাটেজি-র প্রধান। তাঁকে উদ্ধৃত করেই একাধিক সংবাদ সংস্থা বঙ্গোপসাগরে চিনা আগ্রাসনের চেষ্টার কথা জানিয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরে ভারত ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে বলেই চিন এই পাল্টা চাপের কৌশল নিয়েছে বলে ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত।

আরও পড়ুন:

চিনের কৃত্রিম দ্বীপের গা ঘেঁষে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা

কৃত্রিম দ্বীপে গোপনে মোতায়েন চিনা মিসাইল, ফের উত্তপ্ত প্যারাসেল

ভারত মহাসাগরে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইতে চিন-ভারত টানাপড়েন দীর্ঘ দিনের। গত দেড় দশকে ভারতীয় নৌসেনার ব্যাপক শক্তিবৃদ্ধি করে গোটা ভারত মহাসাগরে বেজিংকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। তার সঙ্গে ভারতীয় নৌসেনা ঢুকে পড়েছে দক্ষিণ চিন সাগরেও। গোটা দক্ষিণ চিন সাগরকেই নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে তার বিভিন্ন অংশে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে বেজিং। আমেরিকা, জাপান-সহ বিভিন্ন দেশের মতো ভারতও চিনের এই দখলদারির বিরুদ্ধে সরব। ভিয়েতনাম, ফিলিপন্স ও ব্রুনেইয়ের সঙ্গে চুক্তি করে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনার স্থায়ী উপস্থিতি নিশ্চিত করে ফেলেছে নয়াদিল্লি। তাই বেজিং এ বার ভারত মহাসাগরের বৃহত্তর জলসীমা ছেড়ে ভারতের একান্ত নিজস্ব বঙ্গোপসাগরে থাবা বসানোর নীরব হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে সে দেশের উপকূলে সোনাদিয়াতে বন্দর বানাচ্ছে চিন। কিন্তু, শুধুমাত্র সেই বন্দরের উপর নির্ভর করে বঙ্গোপসাগরে ভারতের একাধিপত্যকে নস্যাৎ করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই নাকি চিন আন্দামান-নিকোবর নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে। বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা। অরুণাচল আর লাদাখের কর্তৃত্ব ভারতের হাতে থাকলেও, চিন এখনও ওই দুই অঞ্চলকে ভারতীয় এলাকা বলে স্বীকৃতি দেয় না। এ বার স্থলসীমা ছেড়ে জলসীমাতেও সেই বিতর্ক ছড়িয়ে দিতে চাইছে বেজিং। আন্দামান-নিকোবরকে নিজেদের এলাকা বলে চিহ্নিত করে ভারতে চাপে ফেলতে চাইছে।

ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই আন্দামান-নিকোবরে কর্তৃত্ব ভারতীয়দের। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দখল নেয়। স্বাধীন ভারতের সরকার প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন নেতাজি। ওই দ্বীপপুঞ্জে ভারতের কর্তৃত্ব নিয়ে কোনও দিনই প্রশ্ন তোলেনি কোনও দেশ। তা সত্ত্বেও চিনা মানচিত্রে আন্দামানের অন্তর্ভুক্তিকে উস্কানিমূলক আচরণ হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE