Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Ordinance Bill to Control Delhi

পূর্ণশক্তি নিয়ে অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’

শেষ মুহূর্তে বেশি অসুস্থ না হলে এই বিল নিয়ে ভোটাভুটির দিনে সংসদে দীর্ঘদিন পরে হাজির থাকতে দেখা যাবে মনমোহন সিংহ, শিবু সোরেনের মতো বর্ষীয়ান সাংসদদের।  

Graphical representation

—প্রতীকী ছবি।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪২
Share: Save:

আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই সংসদে আনা হবে বিতর্কিত দিল্লি অধ্যাদেশ বিল। ওয়াইএসআর কংগ্রেস এই নিয়ে সরকারের পাশে থাকার কথা জানিয়ে দেওয়ায়, রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করাতে আর সমস্যা হবে না বিজেপি সরকারের। কিন্তু এই অধ্যাদেশ, যা বিরোধীদের পটনা সম্মেলনেও শুধুমাত্র ছিল আপ-এর সঙ্কটের বিষয়, এখন তা ক্রমশ ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয়ের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াল। শেষ মুহূর্তে বেশি অসুস্থ না হলে এই বিল নিয়ে ভোটাভুটির দিনে সংসদে দীর্ঘদিন পরে হাজির থাকতে দেখা যাবে মনমোহন সিংহ, শিবু সোরেনের মতো বর্ষীয়ান সাংসদদের।

সূত্রের খবর, এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হাসপাতাল থেকে আসবেন জেডিইউ সাংসদ বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহও। রাঁচী থেকে ইতিমধ্যেই উড়িয়ে আনা হয়েছে জেএমএম-এর প্রতিষ্ঠাতা নেতা শিবু সোরেনকে। তাঁরা কেউ হুইল চেয়ার, কেউ স্ট্রেচার, কেউ অ্যাম্বুল্যান্সে আসবেন অধ্যাদেশ নিয়ে ভোটাভুটির দিন। সূত্রের খবর বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের বিভিন্ন দল নিজেদের মধ্যে কথা বলেছেন। তার পর তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন গত কাল একটি চিঠি দিয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে। ডেরেক লিখেছেন, ‘বিলটি সকাল বেলায় হঠাৎ সংসদের কার্যবিবরণীতে দেখা গেলে সব দল তাদের সব সাংসদকে উপস্থিত করাতে পারবে না। বিশেষ করে তাঁদের কথা খেয়াল রাখতে হবে, যাঁরা গুরুতর ভাবে অসুস্থ— হাসপাতাল কিংবা বাড়ি থেকে যাঁদের অ্যাম্বুল্যান্স অথবা হুইল চেয়ারে আনতে হবে। এক দিন আগে ঘরোয়া ভাবে নোটিস দিয়ে দিলে তাঁদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা সুবিধা হয়।’

পটনার বিরোধী সমাবেশে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল কংগ্রেসকে চাপাচাপি করেছিলেন অধ্যাদেশে সমর্থনের জন্য। এর পরে বেঙ্গালুরু সম্মেলনে ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়। সমন্বয় যে বেশ কিছুটা এগিয়েছে, তা এই ঘটনায় স্পষ্ট। পঞ্জাব এবং দিল্লিতে যুযুধান আপ ও কংগ্রেস। কিন্তু সংসদে ধর্নারত সাসপেন্ড হওয়া আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহের পাশে কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতারা। সনিয়া গান্ধী গত কাল নিজে এগিয়ে গিয়ে কথা বলেছেন ধর্নারত সঞ্জয়ের সঙ্গে। আজ তাঁর কাছে গিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। এ বার অধ্যাদেশের বিরোধিতা করতে অশক্ত শরীরে সংসদে আসার চেষ্টা করবেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মনমোহন সিংহ।

পাশাপাশি দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়ে আপের পাশে থাকতে হুইপও জারি করেছে কংগ্রেস। সমস্ত সাংসদদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি জেডিইউ-র তরফেও হুইপ জারি করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে— হুইপের প্রয়োজন নেই, ওই দিন সবাই থাকবে। এই বিল পাশের ক্ষেত্রে লোকসভায় সরকারের কোনও সমস্যা না থাকলেও, জট ছিল রাজ্যসভায়। কারণে সেখানে বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। রাজ্যসভার সমীকরণ বলছে, অধ্যাদেশ আটকাতে গেলে নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল এবং ওয়াই এস জগন্মোহন রেড্ডির দলেরও সমর্থন প্রয়োজন। কারণ রাজ্যসভায় এখন ২৩৮ জন সাংসদ রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১১৯ জন। বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৯৩। আপ-এর সাংসদ ১০ জন। কংগ্রেসের ৩১ জন সাংসদকে নিয়ে বিরোধী সাংসদদের সংখ্যা ১০৮-এ পৌঁছয়। তার পরে বিজু জনতা দল ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মোট ১৮ জনের ভোট পেলেই অধ্যাদেশ আটকানো যায়। তবে এ দিন সকালেই অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, দিল্লি অধ্যাদেশ বিলে তারা বিজেপির নেতৃত্বে থাকা এনডিএ জোটকেই সমর্থন করবে। জগন্মোহন রেড্ডির দলের সমর্থনে সরকার সহজেই সংসদের দুই কক্ষে এই বিল পাশ করিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE