Advertisement
E-Paper

দু’কুল গেল, মাঠে এখন একা অনুরাগ

এ-কুলও গেল, ও-কুলও গেল। রাজনীতির ময়দানে আগেই হোঁচট খেয়েছেন। নতুন বছরে ইনিংস শুরু হতেই ক্রিকেট প্রশাসনের মাঠেও উইকেট হারালেন অনুরাগ ঠাকুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৪

এ-কুলও গেল, ও-কুলও গেল। রাজনীতির ময়দানে আগেই হোঁচট খেয়েছেন। নতুন বছরে ইনিংস শুরু হতেই ক্রিকেট প্রশাসনের মাঠেও উইকেট হারালেন অনুরাগ ঠাকুর।

গত মাসেই বিজেপির এই তরুণ নেতা সুপ্রিম কোর্ট থেকে ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছিলেন, বছরের গোড়ায় বড় ধাক্কা আসতে চলেছে। বুঝেছিলেন, অবসরের আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তীর্থ সিংহ ঠাকুর বিসিসিআই-এর সভাপতি পদ থেকে তাঁকে গদিচ্যুত করেই ছাড়বেন। মানসিক প্রস্তুতি ছিলই। কিন্তু গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে শপথ করে মিথ্যা বলার দায় তাঁর উপরে চাপতেই হাতে থাকা দলের যুব মোর্চার ভার সে দিনই আকস্মিক ভাবে কেড়ে নেবেন অমিত শাহ, তা ভাবতেও পারেননি অনুরাগ। ফলে অল্প দিনের মধ্যে জোড়া ধাক্কা খেয়ে আজ অনুরাগের হাতে না রইল দলের ভার, না ক্রিকেটের দায়িত্ব।

অথচ বছর কয়েক আগেও অনুরাগের কেরিয়ার গ্রাফ বাড়ছিল চড়চড় করে। হিমাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধুমলের পুত্র অনুরাগ ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছিলেন শিমলার গদিতে বসার জন্য। ঠিক যে ভাবে সমাজবাদী পার্টিতে মুলায়ম মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছেড়ে দিয়েছিলেন অখিলেশকে, সনিয়া গাঁধীও রাহুলের হাতে দলের ভার তুলে দিতে চাইছেন, সে ভাবেই নতুন প্রজন্মের তুর্কি হিসেবে উঠে আসছিলেন অনুরাগ। হিমাচলে এক দিকে প্রেমকুমার ধুমল ও অন্য দিকে প্রবীণ বীরভদ্র সিংহ— এই দুই বৃদ্ধতন্ত্রের মধ্যে অনুরাগই হয়ে উঠছিলেন বিজেপির নতুন প্রজন্মের তুরুপের তাস।

অনুরাগের এই সম্ভাবনা দেখে মোদী জমানার আগেই দলের নেতারা তাঁকে কেন্দ্রীয় স্তরে নিয়ে আসেন। তাঁকে যুব মোর্চার ভার দেওয়া হয়। সেই সময়েই ইউপিএ জমানায় শ্রীনগরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে একটি বড় ‘রাষ্ট্রীয় একতা যাত্রা’ করেন অনুরাগ। যাতে সামিল হয়ে গ্রেফতার হন অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজের মতো নেতারা। কিন্তু মোদী জমানা আসতেই এই যুব নেতাটির জীবনের মোড় অন্য দিকে ঘুরতে শুরু করল। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি ক্রীড়া মন্ত্রকের দায়িত্ব পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মোদী রাজি হননি। তার পর ক্রিকেট-রাজনীতিতে প্রবেশের জন্য জেটলির ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন অনুরাগ। কিন্তু কীর্তি আজাদ, কেজরীবাল তাঁকে নিশানা করতে শুরু করায় জেটলি ক্রিকেট রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন।

বিজেপির সাংসদ অনুরাগ ক্রিকেট রাজনীতিতে আসুন, তাতে সায় ছিল না জেটলির। কিন্তু শরদ পওয়ারের হাতে তামাক খেয়ে বিসিসিআই-এর সভাপতি পদে বসেন অনুরাগ। তার পর থেকে জেটলির সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ে তাঁর। শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে বড় পদ তো বটেই, শীর্ষ আদালতের রায়ে বিসিসিআই-এর পদটিও খোয়ালেন অনুরাগ। অমিত শাহ অনুরাগকে সরিয়ে প্রমোদ মহাজনের কন্যা পুনমকে যুব মোর্চার ভার দিয়েছেন। বিজেপি নেতারা এতেই দেওয়াল লিখন স্পষ্ট পড়তে পারছেন। তাঁরা বুঝছেন, অনুরাগকে তাঁর লড়াই একাই লড়তে হবে। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বিজেপির কোনও নেতা অনুরাগের সমর্থনে এসে বক্তব্য রাখেননি। ঠিক এমনটিই হয়েছিল যুব মোর্চার পদ খোয়ানোর পরেও। অনুরাগ আজ নিজেই আত্মপক্ষ সমর্থনে বিবৃতি দেন। বলেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত লড়াই নয়, একটি ক্রীড়া সংস্থার স্বায়ত্তশাসনের লড়াই। অনুরাগ শিবিরের বক্তব্য, আজকের রায় অপ্রত্যাশিত নয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পরের আইনি লড়াইয়ের জন্যও প্রস্তুত
হচ্ছেন অনুরাগ।

Anurag Thakur Yuva Morcha president BCCI president
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy