Advertisement
E-Paper

ধসে হাইওয়ে বন্ধ জম্মু-কাশ্মীরে, ৭০০ কোটি টাকার আপেল পচে গেল ট্রাকেই!

সপ্তাহ তিন আগে অতিবৃষ্টির কারণে ভূমিধসের পরই বন্ধ হয়ে যায় শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে। তার পর থেকে উপত্যকার বাইরে আপেল যাওয়াও বন্ধ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৫২
Apples worth Rs 700 crore rot on truck in Jammu and Kashmir

টন টন আপেল নষ্ট হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে। ছবি: রয়টার্স।

হাইওয়ের উপর সার দিয়ে দাঁড়িয়ে একের পর এক ট্রাক। তাতে বোঝাই বাক্স, বাক্স আপেল। আর তা নিয়েই বিপদে পড়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের ব্যবসায়ীরা। রাজ্যের বাইরের বাজারে নিয়ে যেতে না-পেরে মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। ট্রাকের মধ্যেই পচছে কোটি কোটি টাকার আপেল!

সপ্তাহ তিন আগে অতিবৃষ্টির কারণে ভূমিধসের পরই বন্ধ হয়ে যায় শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে। তার পর থেকে উপত্যকার বাইরে আপেল পাঠানো বন্ধ। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাইওয়ে সারানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বের অভাব রয়েছে কর্তৃপক্ষের। শুরু হয় বিক্ষোভ। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছেও অবিলম্বে হাইওয়ে চালুর দাবি জানাচ্ছেন ফল ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘মরসুমে প্রতি দিন প্রায় ১,০০০ ফলের ট্রাক কাশ্মীর থেকে রাজ্যের বাইরে যায়।’’ পণ্য এবং ফল বহণকারী ট্রেন পরিষেবা চালু করেছে কেন্দ্র। ব্যবসায়ীদের দাবি, ট্রেন চালুর উদ্যোগ ভাল। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। অর্থাৎ, ট্রাকে করে যে পরিমাণ ফল বাইরে পাঠানো সম্ভব হয়, তা ট্রেনে সম্ভব নয়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, দীর্ঘ দিন হাইওয়ে বন্ধ থাকায় ট্রাকের মধ্যেই আপেল পচতে শুরু করেছে। ক্ষতির পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। কাশ্মীরের গ্রামীণ অর্থনীতি পঙ্গু করে দেওয়া ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। কাশ্মীরের গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিতই হল আপেল। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে আপেল চাষের উপর। সেই উৎপাদিত টন টন আপেলই যদি ট্রাকের মধ্যে পচে যায়, তবে বহু পরিবার সঙ্কটে পড়বে।

সোপোরের পাইকারি বাজারের সভাপতি ফওয়াজ আহমেদ মালিক বলেন, ‘‘হাইওয়ে বন্ধ থাকায় শুধু আপেল চাষিরা নন, ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও।’’ কাশ্মীর থেকে আপেল বাইরে যাওয়া পর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়। ট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই সব ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হচ্ছে। পরিবহণ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। ফওয়াজের অভিযোগ, কোনও রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধি এ নিয়ে কোনও কথা বলছেন না। ওমর আব্দুল্লার সরকারও এই নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও দাবি ব্যবসায়ীদের। ফওয়াজের দাবি, যদি এই সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হন, তবে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত ওমরের।

অন্য দিকে, জম্মু-কাশ্মীরের সরকারের তরফে এই সমস্যা সমাধানের জন্য নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ওমরের দাবি, হাইওয়ে মেরামতির দায়িত্ব কেন্দ্রের। যদি কেন্দ্রীয় সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তা যেন রাজ্য সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়। ওমরের কথায়, ‘‘সমস্যা সমাধানের জন্য আমি আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের কাজে লাগাতে পারি।’’ জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্র রোজই বলছে খুলবে খুলবে, কিন্তু এখনও বন্ধ হাইওয়ে। পণ্যবাহী ট্রেন চালুর জন্য রেল মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওমর। তবে তাঁর দাবি, একটি দু’টি ট্রেন চালিয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

কাশ্মীরে ফলের মরসুম শুরু হয় মে মাসে। সে সময় চেরির চাষ হয়। পরে নাসপাতি-সহ অন্য ফলেরও চাষ হয় উপত্যকায়। তবে কাশ্মীরে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় আপেল। শরৎকালে সেই ফল তোলা হয়। তার পরে তা দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকদের কথায়, ‘‘এ বছর প্রচুর ফল হয়েছে। তবে ধসের কারণে হাইওয়ে বন্ধ থাকায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক।’’

Apple Jammu and Kashmir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy