প্রতীকী ছবি।
কাজের সময়ে মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলেন জওয়ান কাথি রেশান। চোখে পড়ায় ধমক দিয়ে মোবাইল কাড়তে গেলেন মেজর শিখর থাপা। তার জেরে জওয়ান কাথি রেশানের গুলিতে প্রাণ গেল মেজরের। বারামুলা জেলার উরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন সেনা।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, কাথি রেশান ১৯ নম্বর মাদ্রাজ রেজিমেন্টের জওয়ান। তিনি ৮ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে ডেপুটেশনে ছিলেন। মেজর শিখর থাপা ডেপুটেশনে এসেছেন ৭১ নম্বর আর্মড রেজিমেন্ট থেকে। গতকাল রাতে মেজর থাপা দেখতে পান, কাজের সময়ে মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন কাথি। জওয়ানকে ধমক দিয়ে মোবাইল কেড়ে নিতে চেষ্টা করেন তিনি। ধ্বস্তাধ্বস্তিতে মোবাইলের স্ক্রিন ভেঙে যায়। বচসার সুর আরও চড়ে। শেষ পর্যন্ত নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে মেজর থাপাকে লক্ষ করে গুলি চালান কাথি। তাতে নিহত হন মেজর। জওয়ান কাথি রেশানকে সেনা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
সেনা কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রায় তিন দশক আগে কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু হওয়ার পর থেকে সেনার উপরে চাপ বাড়ে। তার পর থেকে কাশ্মীরে সেনাদের একে অপরকে হত্যা ও আত্মহত্যার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকেই এমন ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। সেনা কর্তাদের মতে, এ ক্ষেত্রে মোবাইলের প্রতি আকর্ষণও অনেকটা দায়ী।
আরও পড়ুন: যুদ্ধের হুমকি চিনের, তবু সংযত দিল্লি
অনেক সময়েই মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থেকে দুর্ঘটনা বা নিজস্বী তুলতে গিয়ে মৃত্যুর কথা শোনা যায় আজকাল। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেলের মতে, ‘‘বৈদ্যুতিন মাধ্যমের আকর্ষণ এমনিতেই অনেক বেশি। এখন একটি মোবাইলের মাধ্যমেই চ্যাট থেকে শুরু করে বই পড়া, সব কাজই করা যাচ্ছে। ফলে কার্যত একটি ভার্চুয়াল জগতে ডুবে থাকছেন মানুষ।’’ সেনা কর্তাদের মতে, মেজর স্তরের অফিসার এসে পড়ার পরেও মোবাইলে ডুবে থাকা সেই প্রবণতারই অঙ্গ।
অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানাতেই সেনাদের মানসিক চাপ কমাতে কাউন্সেলিং-সহ বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেনা সূত্রে খবর, এখন জওয়ানদের যোগ করার অভ্যাস বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৬ সালে সামরিক বাহিনীর তিন শাখা মিলে ১২৫ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। ২০১৭ সালে এখনও পর্যন্ত আত্মঘাতী হয়েছেন ১৫ জন। কাজের সময় ছাড়া সামরিক বাহিনীতে জওয়ানদের মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে তেমন কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy