হাতি করিডরের উপরে পাতা সেনাবাহিনীর ‘কাঁটা-চাদর’। নিজস্ব চিত্র
হাতি ‘করিডর’-এর উপরেই সেনা শিবির। ফলে অসমের আমসাং জঙ্গল থেকে প্রায়শই হাতি ঢুকে পড়ে সেনা শিবিরে। তাই হাতি চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিল সেনাবাহিনী। সেনার এমন অমানবিক ও বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত আইন বিরোধী কাজের তীব্র সমালোচনায় সরব পশুপ্রেমীরা। ঘটনা জানতে পেরে বনকর্তারা সেনাকর্তাদের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আমসাং অভয়ারণ্যের গা ঘেঁষেই গুয়াহাটির নারেঙ্গি এলাকায় বিশাল সেনা ছাউনি। সেখানে প্রায়ই ঢুকে পড়ে হাতি। কখনও হাতির বাচ্চা নালায় পড়ে যায়। কখনও দেওয়াল ভাঙে। তাই হাতি রুখতে সেনাবাহিনী সাপ্লাই ডিপোর সামনে কংক্রিটের উপরে তীক্ষ্ণ পেরেকের চাদর বিছিয়ে দিয়েছে। জঙ্গল ও ছাউনির মধ্যবর্তী অংশে ওই চাদরে পা দিয়ে জখম হচ্ছে হাতিরা।
বন দফতরের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই পায়ের ঘা থেকে সংক্রমণ ও সেপ্টোসেমিয়া হয়ে দু’টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। একটি জখম হাতিকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। তিনটি হাতি জখম হয়ে জনবসতির কাছে এসে পড়েছিল বলে তাদের ব্যাপারে জানা গিয়েছে। কিন্তু পেরেকে জখম বা মৃত হাতির সংখ্যা বেশিও হতে পারে। হয়তো অনেকে জখম অবস্থায় জঙ্গলে ফিরে গিয়ে সংক্রমণে মারা গিয়েছে।
গুয়াহাটি বন্যপ্রাণ ডিভিশনের ডিএফও প্রদীপ্ত বরুয়া জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে এ এক নিষ্ঠুর পদক্ষেপ। ৫১ সাব এরিয়ার স্টেশন হেডকে ২৫ ডিসেম্বর চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল, পেরেকের চাদরের বদলে সৌরশক্তি চালিত বেড়া ও পরিখা তৈরি করে হাতিদের ঢুকে পড়া আটকানো হোক। দুই বনকর্মীকে পাকাপাকি ভাবে সেনা ছাউনি থেকে হাতি তাড়ানোর কাজেও মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি নিজে ডব্লুডব্লুএফের প্রতিনিধি ও সাম্মানিক বনপালকে সঙ্গে নিয়ে সেনাকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেও ওই অনুরোধ জানিয়েছেন।
আজ বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পশুপ্রেমীদের তরফে সেনাপ্রধানকে চিঠি পাঠানো হয়। ডব্লুডব্লুএফের কো-অর্ডিনেটর অমিত শর্মা জানান, সেনাবাহিনীর সঙ্গে গত বছরই এ নিয়ে তাঁদের আলোচনা হয়। সেনাবাহিনী কাঁটার চাদর সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করা হয়নি। বনমন্ত্রী পরিমল শুক্ল বৈদ্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিকে, লোক জানাজানি হওয়ার পরে আজ সেনা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট পি খোংসাই জানান, সেনাবাহিনী কাঁটার চাদর সরানোর কাজ শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy