Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দাড়ি কাটতে রাজি না হওয়ায় সেনা বরখাস্ত করল মুসলিম সিপাহিকে

দাড়ি কাটতে রাজি ছিলেন না তিনি। উচ্চতর কর্তৃপক্ষ বার বার নির্দেশ দিচ্ছিল, দাড়ি কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু মাকতুমহুসেন কথা শুনছিলেন না। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর মাকতুমহুসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করল সেনাবাহিনী।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ১১:১৩
Share: Save:

দাড়ি কাটতে রাজি ছিলেন না তিনি। উচ্চতর কর্তৃপক্ষ বার বার নির্দেশ দিচ্ছিল, দাড়ি কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু মাকতুমহুসেন কথা শুনছিলেন না। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর মাকতুমহুসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করল সেনাবাহিনী। তাঁকে ‘অনাকাঙ্খিত সৈনিক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

আর্মি মেডিক্যাল কোর-এর সিপাহি ছিলেন মাকতুমহুসেন। ১০ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তিনি কাজ করছিলেন। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক মাকতুমহুসেনের বরখাস্ত হওয়ার খবর সামনে এনেছে। সেনা সূত্রের খবর, যখন মাকতুমহুসেন চাকরিতে যোগ দেন, তখন তাঁর দাড়ি ছিল না। পরে তিনি কম্যান্ডিং অফিসারের কাছে আবেদন জানিয়ে ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি চান। কম্যান্ডিং অফিসার প্রথমে মাকতুমহুসেনকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেন। তবে তিনি বলেন, দাড়ি রাখার পর নতুন করে ছবি তুলে আইডেন্টিটি কার্ড বানাতে হবে এবং কর্মজীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত মাকতুমহুসেনকে দাড়ি রাখতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে নিয়ে ওই মুসলিম সিপাহি দাড়ি বাড়াতে শুরু করেন। কিন্তু এর পর কম্যান্ডিং অফিসার জানতে পারেন, সেনাবাহিনীর কর্মীদের জন্য দাড়ি রাখা সংক্রান্ত বিধি সংশোধিত হয়েছে। নতুন বিধি জেনে নিয়ে কম্যান্ডিং অফিসার মাকতুমহুসেনকে জানান, দাড়ি কেটে ফেলতে হবে। কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মীদের মধ্যে শুধু শিখরাই ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি পেতে পারেন। অন্য কোনও ধর্মে যেহেতু দাড়ি রাখা আবশ্যিক নয়, তাই শিখ ছাড়া অন্য কোনও ধর্মাবলম্বী কর্মীকে সেনাবাহিনী দাড়ি রাখার অনুমতি দিতে বাধ্য নয়।

আরও পড়ুন:

ইরাক-সিরিয়া যেতে তৈরি পাঁচশো তরুণ

দাড়ি রাখার অনুমতি বাতিল হওয়া সত্ত্বেও মাকতুমহুসেন দাড়ি কাটেননি। কম্যান্ডিং অফিসার বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করে তিনি কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ইতিমধ্যে মাকতুমহুসেনকে পুণের কম্যান্ড হাসপাতালে বদলি করা হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষও মাকতুমহুসেনকে দাড়ি কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। এর পরে সেনাবাহিনীতে ওই সিপাহিকে শোকজ করে। সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় তাঁকে অবাধ্যতার অভিযোগে ১৪ দিনের জন্য ডিটেনশনে পাঠানো হয়। শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত। সেই তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়ে সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইব্যুনালের কোচি বেঞ্চে। ট্রাইব্যুনাল মাকতুমহুসেনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়।

মাকতুমহুসেন সুপ্রিক কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE