ছবি: সংগৃহীত।
ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতা নিয়ে শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়েছে। পাশাপাশি আধারের মামলাটি এখনও অমীমাংসিত। এই অস্বস্তির মুখেই আজ আধারের গুণগান করে একযোগে আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ভাবখানা— আধার মামলায় সরকার যেন জিতেই গিয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের উদ্দেশ্য, ব্যক্তিপরিসর মামলার রায়ে পোড়া মুখকে আড়াল করা।
এ দিন একশো কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে একশো কোটি আধারের যোগ, আর একশো কোটি মোবাইল ফোনের স্বপ্ন দেখিয়ে আধারের পক্ষে সওয়াল করলেন জেটলি। আর প্রধানমন্ত্রী গল্প শোনালেন— গরিব, মহিলা, দলিত, আদিবাসীদের কত লাভ হয়েছে
এই উদ্যোগে।
সুপ্রিম কোর্ট ব্যক্তিপরিসরকে মৌলিক অধিকার বলে রায় দেওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে মুখ খোলেননি। আজ রেডিও-য় ‘মনের কথা’তেও তা নিয়ে রা-টুকু নেই। কিন্তু তিন বছর আগে শুরু হওয়া জনধন প্রকল্পের বড়াই করেছেন তিনি। আর প্রধানমন্ত্রী যেখানে থেমেছেন, তাঁর সেনাপতি জেটলি সেখান থেকেই শুরু করে গুণগান করেছেন আধারের।
ব্যক্তিপরিসর রায়ের পরে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদরা এ’টি তাঁদের জয় হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। তাতে ক্ষুব্ধ প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি। বলেন, ‘‘আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হলে বলতাম, এই মামলা হেরে গিয়েছি। এর ফলে আধার নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। তা হলে সরকারের জয়টা হল কোথায়?’’
চার দিক থেকে এই অস্বস্তির মধ্যেই আজ জেটলি বলেন— জনধন, আধার ও মোবাইল ফোন একটি সামাজিক বিপ্লব। ৭৩.৬২ কোটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৫২.৪ কোটি আধারের সঙ্গে যুক্ত। প্রতি মাসে এই আধার যুক্ত আ্যাকাউন্টগুলিতে ৭ কোটি টাকা লেনদেন করেন গরিবরা। ভীম অ্যাপ ও ইউপিআই-এর দৌলতে গরিবরা এখন ডিজিটালের মূলস্রোতে। ফলে অনায়াসেই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ‘একশো কোটি’র লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে।
তবে বিরোধীদের বক্তব্য, অপচয় রুখে সরাসরি টাকা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ইউপিএ সরকারই আধার চালু করেছিল। আধারের পরিধি বাড়িয়ে এখন ব্যক্তিপরিসরে ঢুকে পড়তে চাইছে সরকার। সুতরাং সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার খতিয়ান দেখিয়ে সরকার আধার নিয়ে তাদের বাড়াবাড়িকে যুক্তিযুক্ত বলতে পারে না। বিরোধীদের দাবি— মামলার শুনানির সময়ে আরও এক দফা মুখ পুড়বে সরকারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy