Advertisement
E-Paper

ব্রহ্মপুত্রের উপর চিনের তৈরি বাঁধ বোমার মতোই ভয়ঙ্কর, বিপন্ন হতে পারে উত্তর-পূর্ব ভারত: অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী

বর্ষার মরসুমে চিন পরিকল্পিত ভাবে ওই বিশাল বাঁধের ‘লক গেট’ খুলে দিলে বিপুল জলরাশি হুড়মুড়িয়ে নেমে এসে অরুণাচলের টুটিং, ইঙকিয়ং এবং পাসিঘাটের মতো শহরগুলির অস্তিত্ব বিপন্ন করতে পারে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ২১:৪৬
Arunachal CM Pema Khandu says, world’s largest dam project in China a ‘water bomb’ for India

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

চিন অধিকৃত তিব্বত থেকে অরুণাচল প্রদেশে বয়ে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ বানাচ্ছে বেজিং। বিষয়টি ভারতের সুরক্ষার ক্ষেত্রে ‘গুরুতর উদ্বেগের’ বলে অভিযোগ করলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা পেমা খান্ডু। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে তিনি বলেন, ‘‘ওই বাঁধ আসলে একটি ‘জল বোমা’। ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপেরই নামান্তর।’’

তিব্বতের ইয়ারলুং সাংপো নদী অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে পরিচিত। সিয়াং আরও নীচে নেমে এসে অসমে নাম নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র। ভারতের আপত্তি উড়িয়ে ২০১৫ সাল থেকেই দফায় দফায় ওই নদীতে চিনা নির্মাণের কাজ চলছে। ফলে ক্রমশই জলস্তর কমছে। চিনা বাঁধের কারণে অদূর ভবিষ্যতে অসম, অরুণাচল-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে মনে করছেন পরিবেশবিদদের একাংশ। কিন্তু এ বার অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বিষয়টিকে ‘নিরাপত্তা সম্পর্কিত’ করে তুলেছেন।

খান্ডুর আশঙ্কা, ভরা বর্ষার মরসুমে চিন পরিকল্পিত ভাবে ওই বিশাল বাঁধের ‘লক গেট’ খুলে দিতে পারে! সে ক্ষেত্রে বিপুল জলরাশি হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে নেমে এলে অরুণাচলের টুটিং, ইঙকিয়ং এবং পাসিঘাটের মতো শহরগুলির অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়বে। বস্তুত, অরুণাচল প্রদেশের আপার সিয়াং এবং পূর্ব সিয়াং জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত সিয়াং নদীর জলস্তরে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার অস্বাভাবিক ওঠাপড়া দেখা গিয়েছে। যার পিছনে বেজিংয়ের প্রত্যক্ষ ‘ভূমিকা’র অভিযোগও উঠেছে।

ঘটনাচক্রে, চিন আন্তর্জাতিক জলচুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। ফলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে বাধ্যও নয়। খান্ডুর মন্তব্য, ‘‘চিনকে বিশ্বাস করা যায় না। ওরা যখন, যা খুশি করতে পারে।’’ কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত একদলীয় চিনা সরকারের দাবি, ব্রহ্মপুত্র্রের বাঁধটি তৈরি করতে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার (প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা) খরচ হতে পারে। বিশ্বের আর কোনও প্রকল্পে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়নি। নদের নিম্ন উপত্যকায় ভারত সীমান্তের অনতিদূরে বাঁধটি তৈরি করা হচ্ছে।

চিনের এই প্রকল্প চিন্তায় রাখছে ভারতকে। কারণ এর ফলে ব্রহ্মপুত্রের জল নিজেদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বেজিং। আর তার ফলে বিপাকে পড়তে পারে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশ। চিনের বাঁধ ব্রহ্মপুত্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে রুখে দিয়ে বর্ষায় উজানের দিকে আরও জল ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা। আবার শুখা মরসুমে জলের অভাবও দেখা যেতে পারে ভারত-বাংলাদেশে। তা ছাড়া ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র দু’টি পাতের সংযোগস্থলে অবস্থিত। হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলও ভূকম্পপ্রবণ। ফলে সংবেদনশীল ওই এলাকায় নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে কৃত্রিম উপায়ে বাধা দেওয়া হলে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও থেকে যায়। চিন অবশ্য জানিয়েছে, তাদের তৈরি বাঁধ পরিবেশগত কোনও ক্ষতি করবে না।

Pema Khandu dam China Brahmaputra River Brahmaputra Siang River Tibet Arunachal Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy