ভারতে প্রতি বছরে মৃত্যুর হারের তুলনায় মৃতের আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার হার একেবারেই নগণ্য। তথ্যের অধিকার আইনে আর্জি জানিয়ে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। ওই সংবাদমাধ্যমটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) প্রায় ১৪ বছর আগে আধার কর্মসূচির দায়িত্ব নিয়েছিল। এত বছরে মাত্র ১.১৫ কোটি ভারতীয়ের আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অথচ ওই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে, সিভিল রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস-এর তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে, ২০০৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর ভারতে অন্তত ৮৩.৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর হারের তুলনায় এত বছরে আধার নিষ্ক্রিয় হয়েছে ১০ শতাংশেরও কম।
চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ১৪২.৩৯ কোটি নাগরিকের আধার কার্ড রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ভারতের জনসংখ্যা ১৪৬.৩৯ কোটি। দেশে ঠিক কত সংখ্যক নাগরিকের আধার কার্ড নেই, সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের কাছে এই ধরনের তথ্য রাখা হয় না বলে উত্তরে জানানো হয়েছে। মৃত্যুহারের তুলনায় আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় হওয়ার সংখ্যা এত কম কেন, তার জবাবে ইউআইডিএআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে যে, আধার নিষ্ক্রিয় করার পদ্ধতি খুবই জটিল। এবং তা অনেক ক্ষেত্রেই নির্ভর করে মৃত যে রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দা, সেখানকার সরকার এবং মৃতের পরিবারের থেকে পাওয়া তথ্যের উপরে। অনেক ক্ষেত্রেই এই সংক্রান্ত যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করা যায় না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আধার নিষ্ক্রিয় বা বাতিল করা সম্ভব হয় না।
তথ্যের অধিকার আইনে যে আর্জি জানানো হয়েছিল, ইউআইডিএআই তার জবাবে জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির আধার বাতিলের পদ্ধতিটি রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (আরজিআই)-র উপরে অনেকখানি নির্ভরশীল। আরজিআই যখন কারও মৃত্যুর খবর সেই মৃত ব্যক্তির আধার নম্বর উল্লেখ করে জানায়, ইউআইডিএআই তাদের কিছু প্রক্রিয়া শেষের পরে সেই নির্দিষ্ট নম্বরটি নিষ্ক্রিয় করে।
মৃত্যুর হারের সঙ্গে আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার অনুপাতে সামঞ্জস্য আনতে ২০২৩ সালে নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছিল। সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম থেকে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পরে মৃত ব্যক্তির নামের বানান ৯০ শতাংশ ও লিঙ্গ ১০০ শতাংশ মিলিয়ে আধার নিষ্ক্রিয় করার কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কোনও কারণে ভুলবশত কোনও জীবিত ব্যক্তির আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফের বায়োমেট্রিক যাচাইকরণের জন্য ইউআইডিএআইয়ের আঞ্চলিক দফতরে যোগাযোগ করতে বলাহয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)