Advertisement
E-Paper

সিএএ ধর্মনিরপেক্ষ হোক, চান ওয়েইসি

ভোটমুখী গুজরাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৬
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। ছবি: পিটিআই

একটি নির্দেশিকায় গুজরাতের মেহসানা এবং আনন্দ জেলার কালেক্টরদের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুসারে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই সংক্রান্ত নির্দেশিকার বিরোধিতা করলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘এই আইন ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া উচিত।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এটা তো হচ্ছেই! প্রথমে তাঁদের (আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়) দীর্ঘ মেয়াদি ভিসা দেওয়া হচ্ছে। তার পরে নাগরিকত্ব পাচ্ছেন।’’

ভোটমুখী গুজরাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন। এটি ভোটের আগে বিজেপির ব্যর্থতা এবং ভুল সিদ্ধান্ত আড়াল করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন ওয়েইসি। তিনি বলেন, ‘‘কেন হিন্দু যৌথ পরিবারের আয়কর ছাড় শুধু হিন্দুদেরই দেওয়া হয়। মুসলিমদেরও দিন, সমানাধিকারকে মৌলিক অধিকার বলে সংবিধান যে স্বীকৃতি দিয়েছে, এটা তো তার পরিপন্থী।’’ একটি নির্দেশিকায় গুজরাতের মেহসানা এবং আনন্দ জেলার কালেক্টরদের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নতুন নিয়ম অনুসারে খতিয়ে দেখে অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে এটা নতুন কিছু নয়। নাগরিকত্বের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। সময়ে সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যের আধিকারিকদের এই সংক্রান্ত ক্ষমতা দিয়ে থাকে। ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২১ সালেও একই ধরনের নির্দেশিকা জারি হয়েছিল গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের জেলা শাসকদের জন্য।

তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সংসদে পাস হয় সিএএ। পরের দিনই রাষ্ট্রপতির অনুমোদন আসে। ওই আইনে বলা হয়েছে, হিন্দু, জৈন, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের যাঁরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে নির্যাতিত হয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মুসলিমদের স্পষ্টতই বাদ দেওয়া নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন উঠেছে। তার আগে থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বার বার বলে এসেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরি হবে। গোটা বিষয়টি মুসলিমদের আলাদা করার চক্রান্ত হিসাবে অভিযোগ করে দেশ জুড়ে হয়েছে প্রতিবাদ। অনেক রাজ্যই জানিয়েছে, তারা এই আইন কার্যকর করবে না। তবে এমনিতেও ওই আইন এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ এখনও তৈরি হয়নি এই সংক্রান্ত স্পষ্ট নিয়মনীতি। সংসদীয় কাজের ব্যবহারবিধি অনুযায়ী, যদি কোনও দফতর বা মন্ত্রক রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরে নির্ধারিত ছ’মাসের মধ্যে আইন প্রণয়ন করতে না পারে, তা হলে তাদের এই সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির কাছে আবেদন জানিয়ে বাড়তি সময় নিতে হবে। যা এক বারে তিন মাসের বেশি হবে না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, সিএএ ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। পরে কোভিডের জন্য তৈরি হওয়া সঙ্কটের উল্লেখ করে আরও কিছু সময় চেয়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভার সংসদীয় কমিটিগুলিকে অনুরোধ করা হয়। প্রথম বার বাড়তি সময় মঞ্জুর হয় ২০২০ সালের জুনে। তার পরে দফায় দফায় তার পুনরাবৃত্তি হয়ে চলেছে।

বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় বেশি কিছু বলতে অস্বীকার করেন ওয়েইসি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট এই নিয়ে আবেদন শুনছে। দেখা যাক, কী হয়।’’

Asaduddin Owaisi CAA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy