তাঁর প্রাণের অসমের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে অখুশি জ়ুবিন গার্গ কিছু দিন আগেই একটি অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে বলেছিলেন, “এ বার সরকারই পাল্টে দেব।” গায়কের মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে এ বার তেমন ঘোষণা করে দিলেন খোদ অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শনিবার অসমবাসীর উদ্দেশে তিনি জানিয়ে দিলেন, জুবিনের মৃত্যুর বিচার এনে দিতে না-পারলে আগামী বিধানসভা ভোটে যেন বিজেপি সরকার পাল্টে দেন তাঁরা।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জ়ুবিনের মৃত্যুর পর থেকে আন্দোলিত সমগ্র অসম। গায়কের অন্ত্যেষ্টির পরেও সেই উত্তেজনা, আবেগ অব্যাহত। কোথাও কোথাও হিংসার ঘটনায় তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সকলকে শান্ত থাকার আর্জি জানিয়ে বলেন, ইতিমধ্যে অসম পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে গায়ক-অভিনেতার মৃত্যুর তদন্ত করছে। হিমন্ত জানিয়েছেন, তাঁদের প্রিয় জ়ুবিনের মৃত্যুর সুবিচার হবেই। শনিবার আরও এক কদম এগিয়ে হিমন্ত চ্যালেঞ্জের সুরে জানিয়ে দিলেন, বিচার না-পাইয়ে দিতে পারলে অসমবাসী তাঁকে শাস্তি দিতে পারেন। সমাজমাধ্যমে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যদি আমরা জ়ুবিনের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না-পারি, তা হলে কেনই বা আপনারা ২০২৬ সালে আমাদের ভোট দেবেন?’’
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মে মাসে অসমে বিধানসভার ভোট। অসমের মুখ্যমন্ত্রী জনগণকে তাঁর ছ’বছরের পুরনো বক্তব্যের কথা মনে করিয়ে দেন শনিবার। তিনি দাবি করেছিলেন, কিছু ব্যক্তি অসমের সাংস্কৃতিক জগতের মুখ জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়াল, বিষ্ণুপ্রসাদ রাভা এবং ভূপেন হজারিকার সমতুল্য ‘জাতীয় সম্পদ’ জ়ুবিনকে বিভ্রান্ত করছেন। সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে অসমে অন্যতম মুখ ছিলেন জ়ুবিন। তবে বিজেপি নেতা তথা অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, জ়ুবিনের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক দর্শন বা মত আলাদা হলেও আদতে তিনি গায়কের অন্যতম ভক্ত। আজীবন থাকবেনও। অসমের সম্পদের এ ভাবে চলে যাওয়া তিনি মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।
আরও পড়ুন:
তবে অসমবাসীকে শান্ত হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন হিমন্ত। তিনি বলেন, ‘‘এটা জ়ুবিনের অসম। একে নেপাল তৈরি করার চেষ্টা করবেন না।’’ তিনি এ-ও জানান, অসম সিট দায়িত্বের সঙ্গে দ্রুত এই মামলার তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে জ়ুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মার বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছে। হিমন্ত আরও বলেন, ‘‘ওঁরা কেউ ভারত ছাড়়তে পারবেন না। স্থলপথ, জলপথ, আকাশপথ— যেখান দিয়েই যেতে চান, ঠিক ধরা পড়বেন।’’ তাঁর আরও দাবি, সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী আট অনাবাসী ভারতীয় যাঁরা জ়ুবিনের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গুয়াহাটিতে পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগের কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।