কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের স্ত্রী এলিজ়াবেথ কোলবার্নের সঙ্গে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে দাবি করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। কংগ্রেস সাংসদকেও সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা যায় না বলে দাবি তাঁর। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করবে অসম পুলিশ। কিন্তু লোকসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা গৌরব গগৈ সেগুলিকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, নিজেদের ব্যর্থতা থেকে দেশবাসীর দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই এ সব কথা আউড়ে চলেছেন শাসক দলের নেতৃবৃন্দ।
স্পষ্ট করে রাষ্ট্রদ্রোহের কথা না বললেও গেরুয়া শিবির যখন ওই পথেই এগিয়ে চলেছে, এ সময়ে গৌরবের পাশে দাঁড়িয়েছে এআইসিসি। সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, অসম বিধানসভার নির্বাচন এগিয়ে আসতেই বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ধরনের কথা বলছে। কংগ্রেসের সাংসদের চরিত্রহরণের অপচেষ্টা করছে। সে জন্য তাঁরা মানহানির মামলা করবেন বলে জয়রাম জানিয়েছেন। গৌরব জানান, ঝাড়খণ্ডের মতো নিজের রাজ্যেও হিমন্তবিশ্ব শর্মার আবোলতাবোল মন্তব্য প্রত্যাখাত হবে।
এ দিকে সমাজমাধ্যমে স্ত্রী এলিজ়াবেথের উদ্দেশে খোলা চিঠি লেখেন সাংসদ গৌরব। তাতে তিনি বলেন, “বিয়ের পর সব মেয়েই নিজের বাড়িঘর, ঘনিষ্ঠজনদের ছেড়ে পতিগৃহে আসে, কিন্তু তোমাকে তোমার মাতৃভূমিও ছেড়ে আসতে হয়। ভারতে এসে তুমি আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি, পরম্পরা আঁকড়ে ধরেছ। এক জন অসমিয়া বধূ হিসেবে অসমে এসে তুমি আমাদের সংস্কৃতি গ্রহণ করেছ।”
নাম, ভাওনা, বিহু, পূজাপার্বণে এলিজ়াবেথের অংশ নেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেন গৌরব। তিনি পত্নীকে বলেন, তাঁর ব্রিটিশ পাসপোর্ট রাখা কোনও অপরাধ নয়, কারও ওসিআই (ওভারসিজ় ইন্ডিয়ান) কার্ড থাকাও দোষের নয়। গৌরবের কথায়, “কারণ অন্য নারীদের মতোই তোমারও মা-বাবা-মাতৃভমির প্রতি অল্প হলেও টান থাকবে। মা-বাবার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তোমারও মন পড়ে থাকবে।” এলিজ়াবেথকে ‘মেধাসম্পন্ন প্রতিভাশালী নারী’ বলে অভিহিত করে গৌরব বলেন, “তুমি আইএসআই নও। অসমের মানুষের ভালবাসা ও আশীর্বাদের উপরে ভরসা রাখো।” সত্যকে সকলেই জানে বলে মন্তব্য করে তিনি খোলা চিঠির শেষে লিখেন “সত্যমেব জয়তে”।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)