জল থইথই পবিতরা অভয়ারণ্য। ডাঙার খোঁজে চলেছে এক গন্ডার। শনিবার উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
ধুবুরির বিলাসিপাড়ায় গত কাল ভেসে যাওয়া বিয়েবাড়ির গাড়িটি আজ উদ্ধার করা হল। তার ভিতরে মিলেছে তিনটি দেহ। গত কাল থেকে নিখোঁজ দুই বাইক আরোহীর দেহও এদিন উদ্ধার করে পুলিশ। সব মিলিয়ে বছরের দ্বিতীয় বন্যার ধাক্কায় এখন অবধি রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪। এখনও কয়েকজন নিখোঁজ। কোকরাঝাড়ে ও লখিমপুরে ২ জন, বিজনি, বঙাইগাঁও, বাক্সা ও শোণিতপুরে একটি করে মৃত্যুর খবর এসেছে।
শুধু ধুবুরি জেলাতেই লক্ষাধিক মানুষ বন্যা কবলিত। ভেঙে পড়েছে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। বহু স্থানে নেই বিদ্যুত্ সংযোগও। পুলিশ জানায়, এনডিআরএফ ও সেনাবাহিনী তল্লাশি চালিয়ে এদিন কাদায় আটকে থাকা অবস্থায় এলেংপাড়া থেকে ভেসে যাওয়া বিয়েবাড়ির গাড়িটির সন্ধান পায়। পাঁক থেকে গাড়িটি তুলে ভিতরে তিন মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়। গত কাল এক কিশোরের মৃতদেহ মিলেছিল। এখনও ওই গাড়িতে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রীর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ দিকে ধুবুরির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল এদিন বন্যা ত্রাণে অবিলম্বে ১০০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে দাবি করেছেন। তিনি ত্রাণ শিবির না খোলা ও ত্রাণ বিলিতে গাফিলতির জন্য রাজ্যের শাসক কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাজ্যের বন্যা মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এখন রাজনীতি করার সময় নয়। সকলকে হাতে হাত মিলিয়ে ত্রাণে নামতে হবে।’’
রাজ্যের ১৯টি জেলা এখন বন্যা কবলিত। বন্যা দুর্গতের সংখ্যা ৭ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মরিগাঁও ও মায়ং-এ বন্যা হয়ে পবিতরা অভয়ারণ্যও জলের তলায়। রাজ্যের ৩৭ নম্বর, ৩১ নম্বর, ১৩ নম্বর, ৫২ নম্বর-সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের বিরাট অংশ জলের তোড়ে অগম্য হয়ে গিয়েছে। কোকরাঝাড়, চিরাং, মাজুলি, ধুবুরির বহু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অসমের রাজস্বমন্ত্রী ভূমিধর বর্মণ ও জলসম্পদ মন্ত্রী বসন্ত দাস এদিন কোকরাঝাড়ে গিয়ে বন্যার অবস্থা সরেজমিনে দেখেন।
এদিকে বৃষ্টি ও ধসে মণিপুরের সঙ্গে নাগাল্যান্ডের কোহিমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ আঙ্গামি এলাকায় ধস নেমে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ১০০ মিটার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, ২৯ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ফেসামা এলাকাতে ধস নেমে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। রাস্তায় আটকে পড়া একটি বাস সরানোর জন্য আনা বিআরটিএফের একটি এক্সক্যাভেটরও ধসে ভেসে গিয়েছে। বাসটিরও একই দশা। তবে, এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। অরুণাচলের লোহিত, নামসাই, কামলং, বেরেং, টেঙাপানি, লাথাও, চোংখাম, মহাদেবপুর, জেংঘটুতে বন্যা চলছে। আলুবাড়ি ও তেজুরের যোগাযোগও বিছিন্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy