Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কংগ্রেস তো বটেই, পঞ্জি নিয়ে তৃণমূলের পাশে নেই প্রায় কোনও দলই

এর জবাব ছিল না তৃণমূলের কাছে। দলের অন্দরে ভাবনা, শিলচর-কাণ্ডে হিতে বিপরীত হল না তো!

এনআরসি নিয়ে সংসদ ভবনের সামনে তৃণমূল এবং সমাজবাদী দলের সাংসদদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

এনআরসি নিয়ে সংসদ ভবনের সামনে তৃণমূল এবং সমাজবাদী দলের সাংসদদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৩
Share: Save:

শিলচর কাণ্ডে সকাল থেকেই শাসক শিবিরকে আক্রমণের জন্য মুখিয়ে ছিল তৃণমূল। লোকসভা শুরু হতেই ওয়েলে নেমে আসে গোটা দল। কিন্তু অন্য বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে কংগ্রেস সামগ্রিক ভাবে এনআরসি তথা নাগরিক পঞ্জির খসড়া নিয়ে দূরত্ব বজায় রাখায় তৃণমূল এ দিন কার্যত চুপসে যায়। এর মধ্যে শাসক শিবির থেকে তৃণমূলের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়ে বলা হয়, ধুলাগড় ও দেগঙ্গায় যখন বিজেপির দল গিয়েছিল, তখন কেন তাঁদের আটকেছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন? এর জবাব ছিল না তৃণমূলের কাছে। দলের অন্দরে ভাবনা, শিলচর-কাণ্ডে হিতে বিপরীত হল না তো!

অসমে এনআরসি-র কাজ শুরু হয়েছিল কংগ্রেস শাসনে। চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে তৃণমূল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নামলেও, কংগ্রেস মধ্যপন্থী অবস্থান নেয়। শুরুতে খসড়া তালিকা নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে বিক্ষোভে শামিল হলেও আজ সংসদের দুই কক্ষেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস।

অনুপ্রবেশকারীরা দেশের সুরক্ষার পক্ষে বিপদ— কথাটা বলে আসছে বিজেপি ও সরকারই। আজ কার্যত সরকারের সুরেই রাজ্যসভায় গুলাম নবি আজাদ মন্তব্য করেন, ‘‘দেশের নিরাপত্তা, ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে সমঝোতা নয়। দেশের কাছে এমন একটি তালিকা থাকা প্রয়োজন, যাতে লিপিবদ্ধ থাকবে, কে দেশের নাগরিক।’’ কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা অন্যান্য রাজ্যে নাগরিক পঞ্জি নিয়ে আশঙ্কার কথা তুলেছিলেন। তাতেও তৃণমূলের পালে হাওয়া ওঠেনি। আর কেন্দ্রের বক্তব্য, এনআরসি-র সিদ্ধান্ত শুধু অসম-কেন্দ্রিক। অন্য কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

লোকসভাতেও আজ কার্যত একা হয়ে পড়ে তৃণমূল। শিলচরের ঘটনা নিয়ে তারা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখালেও, অার কোনও বিরোধী দল তৃণমূলের সমর্থনে ওয়েলে নামেনি। চড়ায়নি সুরও। উল্টে জ়িরো আওয়ারে অসমের সাংসদ তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈই বলেন, ‘‘তালিকা প্রকাশের পর অসম শান্ত। মানুষ ধৈর্য দেখাচ্ছেন। উত্তেজিত ভাষণে কারও লাভ হবে না। সমাধান সূত্র খুঁজতে হবে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না-করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘তালিকা প্রকাশের পর কোথাও গৃহযুদ্ধ বা রক্তস্নানের ঘটনা ঘটেনি। অহেতুক উত্তেজনা ছড়িয়ে প্রাদেশিকতার রাজনীতি করা হচ্ছে।’’

একা পড়ে যাওয়া তৃণমূলকে চেপে ধরে বিজেপি। গুয়াহাটির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অকারণে রাজনীতি করে অসমের শান্ত পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। শিলচরের শান্তি নষ্ট করতেই তৃণমূল সাংসদরা কাল সেখানে গিয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assam NRC Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE