উন্নাওয়ে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের জামিন মঞ্জুরের নির্দেশের বিরোধিতা করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। দিল্লি হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল তারা।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার শীর্ষ আদালতে কুলদীপের সাজা মকুব এবং জামিনের বিরোধিতা করে আবেদন করেছে সিবিআই। উন্নাওকাণ্ডের তদন্তভার ছিল সিবিআইয়ের হাতে। তবে কবে এই মামলার শুনানি হবে, তা এখনও জানা যায়নি। অন্য দিকে, নির্যাতিতার পরিবারও দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে।
২০১৭ সালে উন্নাওয়ে যখন ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সেই সময় নির্যাতিতা নাবালিকা ছিলেন। বাঙ্গেরমউ কেন্দ্রের চার বারের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার ও তাঁর সঙ্গী শশীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। সেই মামলায় ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে পকসো আইনে ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ) ৩৬৬ (অপহরণ ও বিবাহের জন্য বাধ্য করা) ৩৭৬ (ধর্ষণ)-সহ একাধিক ধারায় চার্জ গঠন করে আদালত। সেই মামলায় কুলদীপকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনানো হয়।
নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুলদীপ। সেই মামলায় গত মঙ্গলবার বিজেপির বহিষ্কৃত নেতার জামিন মঞ্জুর করে আদালত। হাই কোর্ট ১৫ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে কুলদীপের সাজা মকুব করে। আদালত আরও জানিয়েছে, উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বাড়ির পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না কুলদীপ। নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি না-দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তবে দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না কুলদীপের। ধর্ষণকাণ্ডের সাজা থেকে মুক্তি পেলেও নির্যাতিতার বাবার মৃত্যুর ঘটনাতে সাজা ভোগ করতে হবে তাঁকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টেই আবেদন করেছেন কুলদীপ, যা এখনও বিচারাধীন।
আরও পড়ুন:
দিল্লি হাই কোর্টের রায় ঘোষণা হওয়ার পরই ইন্ডিয়া গেটের বাইরে অবস্থানে বসেছিলেন নির্যাতিতা এবং তাঁর মা। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েক জন মানবাধিকার কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী। নির্যাতিতার দাবি, ‘‘কুলদীপ মুক্তি পাওয়ায় আমরা ভীত। উনি আমার বাবাকে খুন করিয়েছেন। মিথ্যা অভিযোগে স্বামীকে জেল খাটিয়েছেন। এ বার আমার প্রাণ যেতে পারে।’’ তিনি এ-ও প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘যদি এমন এক জন ধর্ষণের আসামি বেরিয়ে আসে, তা হলে আমরা কী ভাবে নিরাপদে থাকব?’’ পাশাপাশি তিনি জানান, হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। তবে তার আগেই সিবিআই শীর্ষ আদালতে গেল।